শিক্ষকদের আন্দোলনে কুবির ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ

শিক্ষক সমিতির আন্দোলনের কারণে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) সব বিভাগের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ আছে। আজ রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো বিভাগেই ক্লাস হয়নি।
আগামীকাল সোমবারের মধ্যে ক্লাস ও পরীক্ষা চালুর দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন করেছে শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নুরুল করিম বলেন, ‘শিক্ষকদের চলমান কর্মসূচির কারণে আজ স্নাতক পর্যায়ে পাঁচটি ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের একটি চূড়ান্ত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।’
জানা যায়, শিক্ষকদের আন্দোলনের কারণে আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, আইন, পদার্থ বিজ্ঞান ও অর্থনীতি বিভাগের চূড়ান্ত পরীক্ষা বন্ধ ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯টি বিভাগের কোনোটিতেই ক্লাস হয়নি।
শিক্ষক সমিতির ৬ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। দাবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, ১৭ জানুয়ারি রাতে শিক্ষকের বাসায় হামলার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার, শিক্ষক লাঞ্ছনায় অভিযুক্ত ডিন এম এম শরীফুল করিমকে সকল পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া, খালেদ সাইফুল্লাহ হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করা এবং নতুন প্রক্টরকে প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া।
শিক্ষক লাঞ্ছনার ব্যাপারে শিক্ষক নেতারা জানান, গত ডিসেম্বর মাসে ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আবুল হায়াতকে লাঞ্ছিত করেন একই বিভাগের সভাপতি এম এম শরীফুল করীম। এ ঘটনার পর গত ১৮ ডিসেম্বর উপাচার্যকে স্মারকলিপি দেন আবুল হায়াত। নিজের নিরাপত্তা চেয়ে কুমিল্লার সদর দক্ষিণ মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও (জিডি) করেছেন আবুল হায়াত। এম এম শরীফুল করীমকে সব পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার দাবি জানান শিক্ষক নেতারা।
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কাজী ওমর সিদ্দীকী রানা বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো নেই। তাই প্রশাসন আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলনে চলবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আলী আশরাফ বলেন, ‘শিক্ষকদের দাবির বিষয়ে আমাকে লিখিতভাবে কিছু জানানো হয়নি। পত্রিকার খবর থেকে বিষয়গুলো জেনেছি। এগুলো আলোচনা করে সমাধান করতে হবে।’ বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন শিক্ষকদের দুটি পক্ষ আছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে আজ দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকের সামনে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছে। মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যকে ১১ দফা দাবি সংবলিত স্মারকলিপি দেয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দাবিগুলো হচ্ছে, আগামীকাল সোমবারের মধ্যে ক্লাস ও পরীক্ষা চালু, শিক্ষকদের ওপর হামলার প্রতিবাদ, নিরাপত্তার স্বার্থে সিসি ক্যামেরা স্থাপন, পরিবহন ও আবাসন সংকট নিরসনে ব্যবস্থা নেওয়া।