দেশের পরবর্তী নেতৃত্ব আসবে ছাত্রদের মধ্য থেকেই : রেজাউল করীম

প্রত্যেক মানুষেরই ক্যাম্পাস জীবনের অভিজ্ঞতা থাকা উচিত। একজন মানুষ কীভাবে জামাকাপড় পড়বে, কার সঙ্গে কীভাবে কথা বলবে, মানুষের সঙ্গে কীভাবে মিশবে, দেশ ও সমাজের নেতৃত্ব কীভাবে দেবে সবকিছু কিন্তু ক্যাম্পাস লাইফেই গড়ে ওঠে। কথাগুলো বলছিলেন দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের ছাত্র রেজাউল করীম। তিনি অনার্সে ২০১৩ সালে চার পয়েন্টের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩.৯৫ পেয়ে আল মারুফ খান স্বর্ণপদক জয় করেছেন। গত ১৩ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে নেন স্নাতকের সনদ ও স্বর্ণপদক।
শিক্ষাজীবনে এই বড় অর্জনে করীম স্মরণ করলেন তাঁর মামাতো ভাইয়ের কথা। করীম বলেন, ‘উচ্চশিক্ষা অর্জনে ছোটবেলা থেকে আমার এক মামাতো ভাইয়ের অনুপ্রেরণা ছিল অনেক বেশি। বিশেষ করে রুটিনভিত্তিক পড়ালেখা এবং অধিক পরিশ্রম আজ আমাকে এ অর্জনে সবচেয়ে বেশি সহায়তা করেছে।’
করীম বলেন, ছোটবেলা থেকেই তিনি রুটিন করে পড়ালেখা করেন। তিনি বলেন, ‘ময়মনসিংহের ভালুকায় বাটাজোর বিএম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০০৭ সালের এসএসসি পরীক্ষায় আমি প্রথম এ প্লাস পাওয়া ছাত্র ছিলাম। একই সঙ্গে ঢাকার গুলশান কমার্স কলেজ থেকে ২০০৯ সালে এসএইচসি পরীক্ষায় প্রথম গোল্ডেন এ প্লাস পাওয়া ছাত্র ছিলাম। পরে আমার মামাতো ভাইয়ের অনুপ্রেরণায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হই এবং ভালো ফলাফলের মাধ্যমে আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।’ ভবিষ্যতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতার মাধ্যমে দেশ গড়ার কারিগর হতে চান তিনি।
শিক্ষকতার মাধ্যমে জাতির উন্নয়ন করতে চান করীম। ভবিষ্যতে উচ্চ শিক্ষার জন্য বিদেশে যাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও দেশে মূলত নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন তিনি। দুই ভাই এক বোনের মধ্যে সবার ছোট রেজাউল করীম। এসএইচসিতে পড়া অবস্থায় বাবা মারা যান। তবে সংসারের আর্থিক সংকট তাঁকে আটকাতে পারেনি। বরং টিউশনি করে নিজের খরচ চালানোর পাশাপাশি পরিবারকেও সহায়তা করে আসছেন করীম। তাই একই বিষয় থেকে এমবিএ শেষ করেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার স্বপ্ন দেখেন তিনি।
এ ছাড়া শত ব্যস্ততার মাঝেও চেষ্টা করেন বই পড়ার। বিশেষ করে অবসরে হুমায়ূন আহমেদের বই পড়তে ভালোবাসেন।
দেশের রাজনীতি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এই দেশ সম্ভাবনার দেশ, প্রাকৃতিক সম্পদকে ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারলে আমাদের এ ছোট দেশটি উন্নত দেশে পরিণত হবে। প্রয়োজন শুধুমাত্র সঠিক ও যোগ্য নেতৃত্বের। আর যোগ্য নেতৃত্ব কিন্তু ছাত্রদের মাঝ থেকেই গড়ে উঠবে।’ করীম বলেন, ‘ছাত্র রাজনীতির অপব্যবহার বন্ধ হলে দেশের পরবর্তী নেতৃত্ব এখান থেকে গড়ে উঠবে।’
ক্যাপশন :