নৌকার প্রচারণায় অংশ নেওয়ায় ৯ শিক্ষককে শোকজ নোটিশ
পাবনা-৩ আসনে (চাটমোহর, ভাঙ্গুড়া, ফরিদপুর) নৌকার প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণায় অংশগ্রহণ করায় নয় শিক্ষককে শোকজ করেছে নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি। আজ বৃহস্পতিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে পাবনা-৩ আসনের জন্য গঠিত নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি প্রধান এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক তাজউল ইসলাম এ শোকজের চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিন সকালে প্রত্যেককে পৃথকভাবে পাঠানো শোকজ চিঠিতে বলা হয়েছে, একজন শিক্ষক হয়েও আওয়ামী লীগ মনোনীত পদপ্রার্থী মকবুল হোসেনের পক্ষে নৌকা প্রতীকের সমর্থনে নির্বাচনের তফশিল ঘোষণার পর হতে প্রকাশ্যে নির্বাচনি প্রচারণা পরিচালনা করছেন। এ বিষয়ে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীর (ট্রাক প্রতীক) প্রধান এজেন্ট মো. আব্দুল ওয়াহিদ লিখিত অভিযোগ করলে তার পারপ্রেক্ষিতে সরেজমিন অনুসন্ধান করে আপনার/ আপনাদের বিরুদ্ধে করা অভিযোগের সত্যতা প্রতীয়মান হয়েছে। যা একটি নির্বাচনপূর্ব অনিয়ম। এমন নির্বাচনি আইনভঙ্গের কারণে কেন আপনার/আপনাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে না সেমর্মে আগামী ৩১ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় শরীরে নিম্ন স্বাক্ষরকারীর খাস-কামরায় উপস্থিত হয়ে আপনি নিজে অথবা প্রতিনিধির মাধ্যমে লিখিতভাবে ব্যাখ্যা দিতে আপনাকে নির্দেশ দেওয়া হলো।
শোকজ নোটিশপ্রাপ্ত শিক্ষকরা হলেন ভাঙ্গুড়ার মাদারবাড়ীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আলমগীর হোসেন, সুলতানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. হাসানুজ্জামান স্বপন, খানমরিচ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আব্দুল সোবাহান, চকদিগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম, চণ্ডীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান, সুলতানপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. শহিদুল ইসলাম, পুকুরপাড় আইডিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. জিয়াউর রহমান, একই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রওশন আলী এবং মণ্ডতোষ নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. ফারুক আহম্মেদ।
এ বিষয়ে ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্রপ্রার্থী আব্দুল হামিদ মাস্টার বলেন, ‘নির্বাচনের শুরু থেকেই নৌকার সমর্থকরা একের পর এক আচরণবিধি লঙ্ঘন করেই চলেছে। তারা বিভিন্ন সময় আমার লোকজনকে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে এবং মারধর করছে। আমার নির্বাচনি অফিস ভাঙচুর ও পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। এমনকি ভোটকে প্রভাবিত করতে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন প্রশাসনের অনেকেই। এর মধ্যে শিক্ষকরাও রয়েছেন। যারা ভোটের দিন বিভিন্নভাবে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকবেন। এ রকম পরিস্থিতি চলতে থাকলে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। এসব বিষয়ে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের কাছে সহায়তা চেয়ে আমি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মকবুল হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্তদের একজন ও নির্বাচনে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পাওয়া পুকুড়পাড় আইডিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রওশন আলী বলেন, ‘আমি এমন কোনো চিঠি এখনও পাইনি। কেউ হয়তো ষড়যন্ত্রমূলকভাবে অভিযোগ দিতে পারেন। এসব অভিযোগ মিথ্যা, সঠিক না। নির্বাচনে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পেয়েছি কিন্তু কেন্দ্র এখনও বণ্টন করা হয়নি।’