পরীক্ষা দিতে এসে কন্যাসন্তানের মা হলেন মেহেরুন্নেসা
নেত্রকোনার মদনে প্রসব ব্যথা নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে এসে কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন মেহেরুন্নেসা নামের এক শিক্ষার্থী। ওই শিক্ষার্থী আলিম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। এক ঘণ্টা পরীক্ষা শেষ করে গত রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একটি ফুটফুটে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি।
মেহেরুন্নেসা (১৯) উপজেলার ‘আলহাজ্ব মুজাফফর আলিম মাদ্রাসা’র আলিম শ্রেণির ছাত্রী ও মদন পৌর সদরের সাজন মিয়ার স্ত্রী।
মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রসব ব্যথা নিয়ে আলিম পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন ওই শিক্ষার্থী।
হাসপাতাল ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মেহেরুন্নেসা ওই মাদ্রাসার ২০১৯-২০ সেশনে আলিম শিক্ষার্থী। তিনি আলিম শ্রেণিতে লেখাপড়া অবস্থায় সাজান মিয়া সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের পরেও লেখাপড়া চালিয়ে যান তিনি। গত শনিবার রাতে প্রসব ব্যথা শুরু হলে তাকে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
গত রোববার বালাগাত মানতিক চতুর্থ পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন তিনি। এক ঘণ্টা পরীক্ষা দেওয়ার পর প্রসব ব্যথা তীব্র হলে পরীক্ষা শেষ করেন। পরে বেলা সাড়ে ১১টায় কন্যাসন্তান জন্ম দেন।
শিক্ষার্থীর বাবা বেলাল আহমেদ বলেন, ‘গত বছর আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছে। গর্ভবতী অবস্থায় চূড়ান্ত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। তার প্রসব ব্যথা শুরু হলে হাসপাতালে নিয়ে আসে পরীক্ষায় অংশগ্রহণের এক ঘণ্টার পর প্রসব ব্যথা তীব্র হলে পরীক্ষা শেষ করে। কিছুক্ষণ পরেই সে কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়।’
আলহাজ্ব মোজাফফর আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ শামসুল ইসলাম তালুকদার বলেন, ‘করোনাকালীন মাদ্রাসা বন্ধ হয়ে গেলে অনেক ছাত্রী ঝরে যায়। মেহেরুন্নেসা ইচ্ছাশক্তির কারণে লেখাপড়ার ধারাবাহিকতা বজায় রেখে পরীক্ষায় অংশ নেন।’
মদন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মইনুল হোসেন বলেন, ‘শিক্ষার্থী মেয়েটি অত্যন্ত সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে পরীক্ষা অংশগ্রহণ করেছেন। আমরা স্বাস্থ্যবিভাগ যেকোনো সমস্যায় তার পাশে আছি।’
মদন শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার জোৎস্না বেগম জানান, নিয়ম মাফিক হাসপাতালে মেহরুন্নেসার পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। তিনি অত্যন্ত সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন।’