ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে গ্রেপ্তার কলেজছাত্রের তিন দিনের রিমান্ড
ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার সাহাপাড়া গ্রামের সেই কলেজছাত্রের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
লোহাগড়া আমলী আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোরশেদুল আলমের আদালতে গতকাল রোববার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মাকফুর রহমান সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে বিচারক শুনানি শেষে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত শনিবার রাতে খুলনা থেকে ওই কলেজছাত্রকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই দিন রাতে দিঘলিয়া ইউনিয়নের সালাহ উদ্দিন কচি সরদার নামের এক ব্যক্তি বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় তাঁর নামে ‘ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার’ মামলা করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লোহাগড়া উপজেলার দিঘলিয়া ইউনিয়নের সাহাপাড়া গ্রামের ওই কলেজছাত্রের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে ধর্মীয় অবমাননামূলক মন্তব্য করা হয়েছে অভিযোগ তুলে তাঁর গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবি জানায় বিক্ষুব্ধরা। এর জের ধরে গত শুক্রবার ওই কলেজছাত্রের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। এ ছাড়া ওই এলাকার বিভিন্ন বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হয়। এর পাশাপাশি এলাকার মন্দিরেও ভাঙচুর চালানো হয়।
শুক্রবার জুমার নামাজের পর থেকে এসব ঘটনা ঘটে বলে জানা গেছে। এর আগে বিক্ষুব্ধ লোকজন ওই কলেজছাত্রের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে তাঁদের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ করে। এরপর বিকেল থেকে উত্তেজনা আরও বাড়তে থাকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে বিপুল পুলিশ ও র্যাব মোতায়েন করা হয়।
দিঘলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য প্রভাত কুমার ঘোষ বলেন, ‘ওই কলেজছাত্রের ফেসবুকে বিতর্কিত মন্তব্য করা হয়েছে—এমন অভিযোগকে কেন্দ্র করে উত্তেজিত জনতা বাড়িঘরে ভাঙচুর ও মন্দিরে হামলা করেছে। এ ছাড়া বাড়িতে আগুনও দেওয়া হয়েছে।’
লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজগর আলী বলেন, ‘ওই কলেজছাত্র বলেছেন, ফেসবুকের ওই পোস্টটি তিনি করেননি।’ এ বিষয়ে প্রশাসন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আইনগত পদক্ষেপ নেবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
এরই মধ্যে এ ঘটনায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জুবায়ের হোসেন চোধুরীকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিবেশ শান্ত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।