জাতীয় পার্টি কোনো জোটে নেই : জি এম কাদের
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের বলেছেন, জাতীয় পার্টি কোনো জোটে নেই। গেল নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির কোনো জোট ছিল না। সে নির্বাচনে কিছু আসনে নির্বাচনী সমঝোতা হয়েছিল। তখন আসনভিত্তিক আমাদের নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের পক্ষে কাজ করেছেন, আবার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জাতীয় পার্টির পক্ষে কাজ করেছেন। একারণেই তাদের সঙ্গে আমাদের একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে।’
আজ শুক্রবার রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে হিন্দু মহাজোটের প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জি এম কাদের এসব কথা বলেন।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা দেশ ও মানুষের পক্ষে কথা বলতে চাই। আমরা সব সময় সত্য কথা বলতে চাই। ভালো কাজ করলে আমরা আওয়ামী লীগের সঙ্গে থাকতে পারি। কিন্তু, আওয়ামী লীগ যদি গণমানুষের আস্থা হারিয়ে ফেলে, তাহলে আগামীতে আমরা তাদের সঙ্গে নাও থাকতে পারি।’
ইভিএম প্রসঙ্গে জি এম কাদের বলেন, ‘দেশের মানুষ নির্বাচনে ইভিএম চায় না। আমরা শুরু থেকেই ইভিএমের বিপক্ষে। কারণ, ইভিএম হচ্ছে শান্তিপূর্ণ কারচুপির মেশিন। ইভিএমে নির্বাচন হলে যাকে খুশি বিজয়ী করতে পারবে।’
কাদের বলেন, ‘আমরা নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিইনি, নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা অত্যন্ত কঠিন। আমরা বাস্তব অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নেব।’ তিনি আরও বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ রাজনীতি ও নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতা গ্রহণ করতে হয়। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনেও শৃঙ্খলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদি কেউ দলীয় শৃঙ্খলা বিনষ্ট করতে চায়, সে যত বড় নেতাই হোক, যত প্রভাবশালী হোক অথবা যত অর্থবিত্তের মালিকই হোক, কাউকে ছেড়ে দেব না। সব ষড়যন্ত্র উড়িয়ে দিয়ে আমরা দেশ ও মানুষের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করব।’
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশে মেগা প্রকল্প চলছে মেগা দুর্নীতির জন্য। প্রতিটি প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয় কিন্তু নির্ধারিত সময়ে এবং নির্দিষ্ট বরাদ্দে কোনো কাজ শেষ হয় না। প্রতিটি প্রকল্পে অতিরিক্ত সময় ও অর্থ ব্যয় হচ্ছে। এতে প্রমাণ হয়, সম্ভাব্যতা যাচাই সঠিক ছিল না। আবার অতিরিক্ত ব্যয়ের কারণে এই প্রকল্পগুলো কখনোই লাভজনক হবে না। গেল বছরে শুধু সুইস ব্যাংকেই চার লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আর একারণেই গভীর ঝুঁকির দিকে এগোচ্ছে আমাদের অর্থনীতি।’
অ্যাডভোকেট দীনবন্ধু রায়ের সভাপতিত্বে ও প্রিয়াংকা সুকুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায়, জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি বিধান বিহারী গোস্বামী, মহাসচিব অ্যাডভোকেট গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, সাংগঠনিক সম্পাদক সুশান্ত কুমার চক্রবর্তী, জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক সুজন দে, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আলমগীর সিকদার লোটন, ভাইস চেয়ারম্যান এইচ এম শাহরিয়ার আসিফ, সম্পাদক মণ্ডলির সদস্য জহিরুল ইসলাম মিন্টু, আহাদ ইউ চৌধুরী শাহিন, যুগ্ম সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।