কিশোরগঞ্জে বিএনপি-যুবদলের ১৯ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা, গ্রেপ্তার ২
জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস পালন উপলক্ষে কিশোরগঞ্জে গতকাল সোমবার পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলামসহ ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছে পুলিশ। সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা মামলায় ১৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৬০ থেকে ৭০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অনিক কুমার সাহা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
এদিকে গতকাল ঘটনাস্থল থেকে গ্রেপ্তার হওয়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবু নাসের সুমন ও বিএনপিকর্মী সাইফুল ইসলামকে আজ সোমবার বিকেলে আদালতে আনা হলে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আশিকুর রহমান আগামীকাল বুধবার জামিন শুনানির জন্য ধার্য করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- জেলা বিএনপির সহসভাপতি রুহুল হোসাইন, জ্যেষ্ঠ সহসাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক ইসরাইল মিয়া, নাজমুল আলম ও আমিনুল ইসলাম আশফাক, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম, জেলা যুবদলের সভাপতি খসরুজ্জামান শরীফ, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মুশতাক আহমেদ শাহীন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক তারিকুজ্জামান পার্নেল, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মারুফ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ নেভিন, সহসভাপতি মোহাম্মদ হিমেল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন ও রাফিউজ্জমান নৌশাদ।
মামলার এজাহারে আসামিদের বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধাদান, জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি, ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণ ও যান চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টির মাধ্যমে নৈরাজ্য সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়।
তবে, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘৭ নভেম্বর উপলক্ষে আয়োজিত বিএনপির আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের কর্মসূচিতে যোগদান করতে যুবদলের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে কাছাকাছি পৌঁছালে পুলিশ তাদের স্লোগান দিতে বাধা দেয়। এক পর্যায়ে বিনা উসকানিতে পুলিশ ব্যানার কেড়ে নিয়ে শান্তিপূর্ণ মিছিলকারীদের ওপর বেধড়ক লাঠিচার্জ ও গুলি করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। গুলি ও লাঠিচার্জে জেলা যুবদলের সভাপতি খসরুজ্জামান শরীফ, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মুশতাক আহমেদ শাহীন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, হোসেনপুর উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক শাফায়েতুল হাসানসহ ১৮ জন আহত হয়। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর।’
কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ দাউদ বলেন, ‘যুবদলের মিছিল থেকে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করায় তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেছি। কিন্তু, তারা আরও বেপরোয়া হয়ে চেয়ার ও ইটপাটকেল ছুড়ে মারে। পরে অতিরিক্ত পুলিশ এসে লাঠিচার্জ ও শটগানের সাত রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় তিনিসহ পুলিশের ১২ সদস্য আহত হয়েছেন। পরে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের আইনের আওতায় আনতে অভিযান চলছে।’