তালগাছ মেরে ফেলায় আ.লীগ নেতাকে দাঁড় করিয়ে রাখলেন আদালত
কীটনাশক দিয়ে ৫০টি তালগাছ মেরে ফেলায় আওয়ামী লীগনেতা শাহরিয়ার আলমকে আজ বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত দাঁড় করিয়ে রাখেন আদালত। শাহরিয়ার রাজশাহীর বাগমারার একটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি। পুলিশ আজ তার জড়িত থাকার বিষয়ে হাইকোর্টে প্রতিবেদন জমা দিলে আদালতের নির্দেশে তাকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়। পরে আগামী ৪ এপ্রিল পরবর্তী আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন আদালত। ওদিন অভিযুক্ত এবং ওসিকে হাজির থাকতে ও পুলিশকে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।
জানা গেছে, পুলিশ আজ সকালে বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে এ প্রতিবেদন জমা দেয়। পরে আদালত তার সিদ্ধান্ত জানান।
গত ১২ ফেব্রুয়ারি শুনানিতে কীটনাশক দেওয়ার ফলে গাছগুলোর ছবি দেখে হাইকোর্ট বলেছিলেন, ‘আপনারা হয়তো মনে করবেন যে, তালগাছের মতো ছোট্ট একটা বিষয়ও হাইকোর্ট দেখে? হ্যাঁ, আমাদের দেখতে হয়। কারণ, সুপ্রিম কোর্টকে বলা হয় জাগ্রত বিবেক। আমরা তাল গাছগুলোতে বিষ দেওয়ার সংবাদ দেখে আহত হয়েছি। একটা গাছ বড় হতে ১২ থেকে ১৪ বছর সময় লাগল। আর সেই গাছগুলোর ডাল কেটে বিষ দিয়ে দেওয়া হলো! একটা পশুরও তো মায়া থাকে! বিষ দেওয়া তালগাছগুলোর ছবি দেখে আমাদের হৃদয় ভেঙে গেছে।’
এর আগে রাজশাহীর বাগমারার বাইগাছা এলাকায় ৫০টি তালগাছ মেরে ফেলার জন্য কীটনাশক প্রয়োগের বিষয়ে ব্যাখ্যা জানাতে উপজেলার শুভডাঙ্গা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শাহরিয়ার আলমকে তলব করেন হাইকোর্ট। ১২ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০টায় তাঁকে আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া হয়। নির্দেশ মতো হাজির হলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নেতাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে রাখেন আদালত। সেদিন বাগমারা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাইকোর্টে হাজির হয়ে এ ঘটনায় তাদের সরেজমিন তদন্ত প্রতিবেদন ছবিসহ দাখিল করেন।
পরে আদেশে হাইকোর্ট ২৩ ফেব্রুয়ারি পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট বাগমারা প্রতিনিধিকে তালগাছ সংক্রান্ত কথোপকথনের রেকর্ডসহ হাইকোর্টে উপস্থিত হতে নির্দেশ দেন। আর এ বিষয়ে করা জিডির পরিপ্রেক্ষিতে আইনগত কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা হাইকোর্টে হাজির হয়ে জানাতে বাগমারা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে শাহরিয়ার আলমকে ২৩ ফেব্রুয়ারি আবার হাইকোর্টে হাজির থাকতে বলা হয়।