ট্রলারে ১০ মরদেহের ঘটনায় তদন্ত চলছে : ডিআইজি আনোয়ার
কক্সবাজারের নাজিরারটেক সমুদ্র উপকূলে ভাসমান ট্রলার থেকে ১০ জনের মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন। তিনি বলেছেন, এই ঘটনার পেছনে কারা জড়িত, তা খুঁজতে তদন্ত চলছে। ঢাকা থেকেও স্পেশাল টিম এসেছে। তদন্তের শেষে সুনির্দিষ্টভাবে বলা যাবে।
আজ সোমবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে নিহতদের আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন ও সিআইডি পুলিশের ডিআইজি মো. হাবিবুর রহমানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। এসময় ডিআইজি আনোয়ার সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
এক প্রশ্নের উত্তরে মো. আনোয়ার বলেন, ‘আপনারা জানেন যে, গতকাল একটি ফিসিং বোটের ভেতরে দশটি লাশ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে চারজনকে তাদের আত্মীয়-স্বজনরা শনাক্ত করতে পেরেছেন। লাশগুলো ডিকমপোস্ট হয়ে গেছে। বাকিগুলো এখন পর্যন্ত শনাক্ত করতে পারেনি। আমরা চেষ্টা করছি, সেগুলো শনাক্ত করার জন্য। তাদের ডিএনএ স্যাম্পল রাখা হবে। সেই স্যাম্পল থেকে তাদের আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে মিলিয়ে সেই লাশগুলো হস্তান্তরের ব্যবস্থা করা হবে।’
ডিআইজি আনোয়ার আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সুনিশ্চিতভাবে বলতে পারছি না, কীভাবে এই ঘটনা ঘটছে। আমাদের ইনভেস্টিগেটররা কাজ করছে। ঢাকা থেকে সিআইডি, পিবিআই স্পেশাল টিম এসেছে, তারাও কাজ করছেন। এই ঘটনার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
প্রতিটি ট্রলারে নাম লেখা থাকলেও এই ট্রলারে কোনো নাম-ঠিকানা নেই, আর যাদের উদ্ধার করা হয়েছে, তাদের পোশাক কালো রঙের ছিল—বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন? এমন এক প্রশ্নে ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সুনির্দিষ্টভাবে এখনই কিছু বলতে পারছি না। যেমন আপনি বলছেন, ট্রলারে নাম লেখা থাকে। এগুলো নিয়ে আমরা ট্রলারের মালিক সমিতির সঙ্গে কথা বলব। যারা মাছ ধরতে যান, তাদের সঙ্গে কথা বলব। তাদের কাছ থেকেও আমরা তথ্য পাব। অনুসন্ধানের পর আমরা সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলতে পারব। এই মূহূর্তে আসলে আমার পক্ষে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলা সম্ভব না বা বলা ঠিক হবে না।
অপর এক প্রশ্নে ডিআইজি আনোয়ার বলেন, ‘যেহেতু লাশগুলো একটু ডিকমপোস্ট হয়ে গেছে, সুতরাং, তাদের সবারই স্যাম্পল রাখা হবে। সেই স্যাম্পল থেকে আমরা নিশ্চিত করব। আর কয়েকজনের লাশ তাদের আত্মীয়-স্বজন এসেছেন, তারা চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছেন। ওই লাশের যদি আর কোনো দাবিদার না থাকে, সেক্ষেত্রে যদি আমরা সুনিশ্চিত হই যে তারই আত্মীয়, তাহলে নিকট আত্মীয়ের কাছে আমরা লাশ হস্তান্তর করব।’
দুপুরের পর হাসপাতাল মর্গে নিহতদের ময়নাতদন্ত শুরু হয়। জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, ভাসমান ট্রলার থেকে মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। এটি একটি বড় হত্যাকাণ্ড। এ নিয়ে সিআইডি-পিবিআইসহ আইনশৃংখলা বাহিনী কাজ করছে। তাদের কাজ শেষ হলে পুরো ঘটনা সম্পর্কে অবহিত করা হবে।
এর আগে গতকাল রোববার সকালে ট্রলারটি টেনে কক্সবাজারের নাজিরারটেকে নিয়ে আসেন স্থানীয় জেলেরা। খবর পেয়ে দুপুর ২টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে ১০ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস।