তারেক ও জুবাইদাকে ফরমায়েশী সাজা দেওয়ার শঙ্কা মির্জা ফখরুলের
জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তাঁর স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানকে সরকার ফরমায়েশী সাজা দিতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পাশাপাশি বেগম খালেদা জিয়াসহ বিএনপির অনেক নেতাকে ফরমায়েশী রায়ের মাধ্যমে সাজা দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার (১ আগস্ট) দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এই শঙ্কার কথা প্রকাশ করেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গত কয়েক দিনের ঘটনা প্রবাহে আশঙ্কা করছি, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় তারেক রহমান ও তাঁর স্ত্রীকে সরকারি নীল নকশায় হয়তোবা সাজার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অথচ, এই মামলা চলার মতো কোনো আইনগত উপাদান নেই। কেননা তারেক রহমানের প্রদেয় সম্পদ বিবরণী যা ২০০৭ সালে জমা দেওয়া হয়েছিল সেই সম্পদের পুরো আয়কর জমা দেওয়া হয়েছিল। ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ হচ্ছে ৩৫ লাখ টাকা এফডিআর, ওই এফডিআরের মামলা দায়েরের আগেই (২০০৫-২০০৬ অর্থবছর) ট্যাক্স রিটার্ন দেওয়া হয়েছিল।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারেক রহমান ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে ঢাকার বিশেষ আদালতে চলমান এই মামলায় অবিশ্বাস্য দ্রুততায় সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। আগামীকাল রায়ের জন্যও দিন ধার্য করা হয়েছে। দেশে লাখ লাখ মামলার জট থাকলেও এই মামলায় ১৬ দিনে ৪২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। রাতেও একতরফাভাবে সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।’
বিএনপির মহাসচিব অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের আইনজীবীরা এ ধরনের বিচার কাজের বৈধতা বিষয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করতে গেলে তাদের ওপর পুলিশ ও সরকার দলীয় আইনজীবীরা একাধিকবার হামলা চালিয়েছে। তাদেরকে আদালত কক্ষ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে বিচারের নামে ক্যামেরা ট্রায়াল চালানো হয়েছে।’
বিএনপির শীর্ষস্থানীয় এই নেতা বলেন, ‘এত কিছুর পরও দেশের মানুষ ন্যায়বিচার আশা করে। যদি অন্যায়ভাবে কোনো কিছু করা হয়, তাহলে বিচার বিভাগের ওপর মানুষের সর্বশেষ আশাটুকু শেষ হয়ে যাবে।’
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) শুধুমাত্র সরকারের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানই নয়, বিরোধী দলীয় দমন কমিশনে পরিণত হয়েছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সর্বক্ষেত্রে বিচারের নামে প্রহসন প্রত্যক্ষ করছি। ইতোপূর্বে আমাদের দলীয় প্রধান বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। তাঁকে দীর্ঘ বছর ধরে কারান্তরীণ করে রাখা হয়েছে। নিম্ন আদালতের সাজা উচ্চ আদালত কর্তৃক নজীরবিহীনভাবে বৃদ্ধি করা হয়েছে।’
বিএনপির জ্যৈষ্ঠ নেতাদের একটি তালিকা সরকার তৈরি করেছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তালিকায় থাকাদের মামলা দ্রুত শেষ করতে চিঠিও দেওয়া হয়েছে। যাতে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে। ইতোমধ্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমানউল্লাহকে সাজা দেওয়া হয়েছে।’