সিনেমাটোগ্রাফার আবিরের ‘রহস্যজনক’ মৃত্যু, শিক্ষক-সহপাঠিদের মানববন্ধন
মিরপুরের বাসা থেকে ১২ আগস্ট (শনিবার) বেরিয়ে আর ফেরেননি চলচ্চিত্র সংসদকর্মী ও শিক্ষার্থী হুমায়ুন রশিদ রতন (আবির)। পরদিন তুরাগ নদী থেকে তাঁর ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তাঁর এই ‘রহস্যজনক’ মৃত্যুর কারণ খুঁজে বের করা এবং দোষীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে শনিবার (১৯ আগস্ট) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেছেন আবিরের শিক্ষক, স্বজন ও সহপাঠিরা। ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি এই মানববন্ধনের আয়োজন করে।
মানববন্ধনে অংশ নেন চলচ্চিত্রকার মসিহউদ্দিন শাকের, চলচ্চিত্র শিক্ষক মানজারে হাসিন মুরাদ, চিত্রগ্রাহক ও নির্মাতা পঙ্কজ পালিত, ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি বেলায়াত হোসেন মামুন, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কাজী আতিকুর রহমান অভিসহ আবিরের সহকর্মী, বন্ধু ও সহপাঠীরা।
আবিরের মৃত্যুর ঘটনাকে ‘রহস্যজনক’মন্তব্য করে চলচ্চিত্রকার মসিহউদ্দিন শাকের বলেন, আবির অত্যন্ত মেধাবী একজন চলচ্চিত্রকর্মী ছিলেন। আবিরের সাথে আমার পরিচয় ছিল। তার এমন মৃত্যু কোনোভাবেই গ্রহণ করা যায় না। আমি আমাদের একজন অনুজ চলচ্চিত্র সংসদকর্মীর এই মর্মান্তিক মৃত্যুকে অত্যন্ত রহস্যজনক বলে মনে করি। আমি এই মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত চাই।
মুভ্যিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি জানায়, তরুণ সিনেমাটোগ্রাফার, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা কোর্সের শিক্ষার্থী এবং ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটির দপ্তর সম্পাদক আবিরের ভাসমান মরদেহ গত ১৩ আগস্ট বিকেলে তুরাগ নদী থেকে পুলিশ উদ্ধার করে।
মানববন্ধনে ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ও ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটির সভাপতি বেলায়াত হোসেন মামুন বলেন, আবির আমাদের ম্যুভিয়ানার একজন কর্মী ও সংগঠক ছিলেন। আমি তাকে গত ১৫-১৬ বছর ধরে দেখেছি। সে অত্যন্ত প্রাণবন্ত, উৎসুক এবং বিনয়ী একজন মানুষ ছিলেন। তরুণ একজন সিনেমাটোগ্রাফার হিসেবে আমি দেখেছি, সে নিজের কাজের বিষয়ে অত্যন্ত যত্নবান। এমন সম্ভাবনাময় একজন তরুণের মৃতদেহ নদীতে কেন ভাসবে কেন তার এমন মৃত্যু হবে, এই মৃত্যু কোনোভাবেই স্বাভাবিক হতে পারে না। আবিরের মৃত্যুর অনুপুঙ্খ তদন্তের দাবি করছি। আমরা আবিরের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে চাই। আমরা চাই আবিরের মৃত্যুর সাথে যদি কেউ জড়িত থেকে থাকে তবে তার বিচার হোক। আবিরের মৃত্যুর ন্যায়বিচার হোক।
আবিরের পরিবারের ভাষ্য, আবির আগের দিন সন্ধ্যায় মিরপুর ৬ নম্বর সেকশনের বি ব্লকের নিজেদের বাড়ি থেকে বের হয়ে আর ফেরেননি। পরদিন পুলিশ আবিরের লাশ উদ্ধারের পর শনাক্ত করার জন্য তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে। পরে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে মরদেহের ময়নাতদন্তের পর ১৪ আগস্ট বিকেলে মিরপুর ১১ নম্বর কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়।