মার্চে বোতলজাত সয়াবিন ১৬৩ টাকায় বিক্রির নির্দেশ ভোক্তা অধিকারের
আগামী পহেলা মার্চ থেকে সারা দেশে ১৬৩ টাকায় বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি শুরু হবে। যারা এর ব্যত্যয় করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি জানিয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
আজ বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের নগরীর নিতাইগঞ্জে এক অভিযানে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ হুঁশিয়ারি দেন। অভিযানে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাসহ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জনগণের স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে ভোজ্যতেল বোতল ও প্যাকেটজাত করে সরবরাহ করা হবে জানিয়ে মহাপরিচালক বলেন, আগামীতে শতভাগ তেল বোতল ও প্যাকেটজাত করা হবে। এতে দুই-তিন টাকা খরচ বাড়লেও কমবে মৃত্যু ঝুঁকি। কারণ ভোজ্যতেল ক্রয়-বিক্রয়ে অনিরাপদ ড্রাম ব্যবহার করা হয়। অস্বাস্থ্যকর তেল খাওয়ার পর মানুষের হার্ট অ্যাটাক হয়। এ ছাড়া ড্রামে নানা ধরনের ক্যামিকেল থাকায় কিডনির ক্ষতি হয়। এ কারণে অল্পবয়সীরাও কিডনি রোগে ভুগছে। তাই জনগণের স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমাতে সব ধরনের তেল বোতল ও প্যাকেটজাত করা হবে।
আগামী কাল থেকে সারা দেশের ডায়াগনস্টিক ও ক্লিনিকে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর অভিযান পরিচালনা করবে বলেও জানান ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
এর আগে দিনব্যাপী নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রিজ ভবনে ভোজ্যতেল ক্রয়-বিক্রয় ও অনিরাপদ ড্রাম ব্যবহার পর্যায়ক্রমে বন্ধ করা সংক্রান্ত কর্মশালায় অংশ নেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হকের সভাপতিত্ব এ সময় আরও বক্তব্য দেন ন্যাশনাল হার্ড ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশর রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান প্রফেসর সোহেল রেজা চৌধুরীসহ অনেকেই।
কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশের সব ফুড বিজনেস পাঁচ-ছয়টি করপোরেট গ্রুপের হাতে চলে গেছে। তারা যেকোনো বিষয়ে বাজার অস্থির করতে পারে। সামনে ভয়াবহ অবস্থা আসছে, তাদের এখন চালের উপর হাত পড়েছে। এ কারণে চালের বাজার অস্থির হয়ে যাচ্ছে। ডিম, ব্রয়লার মুরগি উপরও হাত পড়েছে। উন্নত দেশগুলোতে করপোরেট কালচার পজেটিভ সেন্সে দেখা হয় কিন্তু বাংলাদেশে এটা নেগেটিভ সেন্সে চলে যাচ্ছে। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের কর্পোরেট কালচারের জন্য লক্ষ লক্ষ এসমি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে দেয়া হয় একটা সময় আসবে আরো ভয়াবহ হবে। অসাধু ব্যবসায়ীরা যে কোন সময় যেকোনো পণ্যের বাজার অস্থির করে ফেলতে পারে। সামনে রমজান দ্রব্যমূল্যের অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। খাদ্য পণ্যের সরবরাহর কোনো ঘাটতি নেই।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আরও বলেন, যখন অভিযানের পরিচালনা করা হয় কেন দোকান বন্ধ করে চলে যায় কারণ তারা অন্যায় করছে। আমরা সাধুবাদ জানাই মাংস ব্যবসায়ী খলিলকে। খলিল যখন গরুর মাংসের দাম ৫৯৫ টাকা বিক্রি শুরু করল তখন মাংসের দাম ৮০০ টাকা থেকে সাড়ে ৬০০ টাকা থেকে ৬২৫ টাকায় চলে এসেছে। কম দামে মাংসের বিক্রির কারণে খলিলকে ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। এমনই একজন রাজশাহীতে খুন করা হয়েছে। যদি কেউ সৎ ব্যবসা করতে চায় ভালোভাবে ব্যবসা করতে চায় তিনি টিকে থাকতে পারবেন না অসাধু ব্যবসায়ীদের কারণে।