জলদস্যুদের কবলে মেরিন ইঞ্জিনিয়ারের বাড়িতে আর্তনাদ
ভারত মহাসাগরের সোমালিয়ায় জলদস্যুরা বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ায় জাহাজের মেরিন ইঞ্জিনিয়ার মো. রোকন উদ্দিনের গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনার চলছে আর্তনাদ। খবর শুনে বাড়িতে ভিড় করছে এলাকাবাসী।
গতকাল মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বাংলাদেশ সময় দুপুর দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জিম্মিদের পরিচয় উঠে আসার পরই জানা গেছে জাহাজে থাকা নেত্রকোনার রোকনের নাম। তিনি জাহাজটির থার্ড ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। জেলার সদর উপজেলার ঠাকুরাকোনা ইউনিয়নের বাঘরোয়া গ্রামের মিরাজ আলীর ছেলে রোকন উদ্দিন। রোকনের পরিবারের সদস্যদের আর্তনাদ ঘরে ফিরে আসুক তাদের ছেলে। এ সংবাদ জানার পর বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তার মা লুৎফুনাহার।
ঠাকুরাকোনা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য একলাছ বলেন, ‘বাঘরোয়া গ্রামের মিরাজ আলীর পাঁচ সন্তান। তিন ভাই ও দুই বোনের মাঝে ছোট ছেলে রোকন উদ্দিন। কৃষক মিরাজ আলী খুব কষ্ট করে ঋণ করে ও জমি বিক্রি করে ছেলেকে পড়াশোনা করিয়েছেন। রোকন ছিলেন আমাদের গ্রামের গর্ব। আমরা তার সুস্থ অবস্থায় ফিরে আসা কামনা করি। ছেলের খবর শুনে কৃষক বাবা মিরাজ আলী নির্বাক হয়ে গেছেন।’
প্রতিবেশী লিটন শীল বলেন, ‘রোকনের কিছু হলে পরিবারটি নিঃস্ব হয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপসহ কোম্পানি জলদস্যুদের সব দাবি মেনে রোকনসহ সবার জিম্মি মুক্তির দাবি জানাচ্ছি।’
জাহাজের নাবিক ও ক্রুরা এরইমধ্যে ফেসবুক পোস্টে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছেন। জাহাজের চিফ অফিসার আতিক উল্লাহ খান ও ক্রু মো. আসিফুর রহমান জানান, পণ্যবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিয়েছে জলদস্যুরা। নিজেরা সুস্থ রয়েছেন জানিয়ে সবার কাছে নিরাপত্তার জন্য দোয়াও চেয়েছেন তারা।
আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে গতকাল মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুরে ভারত মহাসাগরে সোমালিয়ায় জাহাজটিকে জিম্মি করে জলদস্যুরা। জিম্মি করা হয় জাহাজের ২৩ নাবিককে। জিম্মিদের মধ্যে চট্টগ্রামের ১১ জন ও নোয়াখালীর দুজন রয়েছেন। এ ছাড়া জাহাজটিতে নাটোর, নওগাঁ, ফরিদপুর, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, বরিশাল, নেত্রকোনা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও খুলনার নাবিক রয়েছেন।