গোয়েন্দা নজরদারিতে পশুরহাট, অনিয়ম পেলেই ব্যবস্থা
গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছে রাজধানীসহ দেশের সব কয়টি পশুরহাট। এমনকি, অনলাইনে পশু কেনাবেচাতেও আছে নজরদারি। কোরবানির পশু কেনাবেচায় অনিয়ম, এক হাটের গরু আরেক হাটে জোর করে নামিয়ে নেওয়া, পথে চাঁদাবাজি, হাসিলে হেরফের, জালটাকা বিলিবণ্টনসহ যেকোনো অনিয়ম পেলেই ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি দিয়েছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম আজ শুক্রবার (১৪ জুন) দুপুরে রাজধানীর গাবতলী কোরবানির পশুর হাটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, র্যাব যেকোনো ধরনের অপতৎপরতা রুখতে সচেষ্ট রয়েছে। পবিত্র ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে পশুর হাট, কোরবানি, ঈদের জামায়াত, চামড়া বেচাকেনাসহ বেশ কিছু কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এক্ষেত্রে যেকোনো ধরনের অপতৎপরতা রুখতে সচেষ্ট রয়েছে র্যাব।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, কোরবানির হাটে পশু কেনাবেচায় প্রচুর আর্থিক লেনদেন হয়। এক্ষেত্রে অসাধু চক্রের মাধ্যমে জাল টাকার ছড়াছড়ির আশঙ্কা থাকে। জাল টাকা তৈরি ও সরবরাহের সঙ্গে জড়িত চক্রের বিরুদ্ধে গোয়েন্দা নজরদারি রয়েছে। হাটগুলোতে জাল টাকা শনাক্তে র্যাব ফোর্সেসের কন্ট্রোল রুমে জাল নোট শনাক্তের মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে র্যাব সহায়তা করছে।
আরাফাত ইসলাম বলেন, এ সময়ে কোরবানির হাট কেন্দ্রিক ও মার্কেটে চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই, প্রতারক চক্র, দালাল, মলম পার্টি এবং অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা বৃদ্ধি পাওয়ার শঙ্কা থাকে। এসব অনাকাঙ্খিত ঘটনা রুখতে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। তিনি বলেন, অসুস্থ গবাদি পশু শনাক্তকরণে র্যাবের নজরদারি চলমান থাকবে। পাশাপাশি পশু চিকিৎসকের সহায়তায় এসকল গবাদি পশু শনাক্ত করে বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে র্যাবের ম্যাজিস্ট্রেটরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
আরাফাত আরও বলেন, পশুর হাটগুলোর হাসিল ঘরে সিটি করপোরেশন অথবা স্থানীয় সরকার কর্তৃক নির্ধারিত হাসিল তালিকা আকারে প্রদর্শিত থাকতে হবে। নির্ধারিত হারের বেশি হাসিল নেওয়া প্রতিরোধে র্যাবের নজরদারি থাকবে। কেউ নির্ধারিত হারের বেশি হাসিল আদায় করলে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
র্যাবের এই কর্মকতা বলেন, এক হাটের গরু জোর করে অন্য হাটে নামানোসহ পশুর হাট কেন্দ্রিক বিভিন্ন ধরনের চাঁদাবাজি ঠেকাতে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি ও টহল পরিচালিত হচ্ছে। ঢাকামুখী পশু বহনে চাঁদাবাজি রুখতে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি ও নিয়মিত টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে। সড়কপথে নিরাপত্তা বিধানে র্যাবের মোবাইল টহল পরিচালিত হচ্ছে। তিনি বলেন, এ বছর অনলাইনে প্রচুর কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে অনিয়ম ও প্রতারণা প্রতিরোধে র্যাব সাইবার মনিটরিং সেল সার্বক্ষণিক ভার্চুয়াল জগতে নজরদারি করছে। অনলাইনে পশু কেনা বেচার লেনদেনের ক্ষেত্রে সর্তক থাকতে হবে। কোরবানির পশুর চামড়ার বাজার ধস নামাতে মুনাফালোভী সিন্ডিকেটের কারসাজির বিরুদ্ধে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি রয়েছে।
কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, কোরবানির পশুর হাটে আগত মহিলাদের উত্যক্ত রোধে মোবাইলকোর্টসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কেউ কোনো ধরনের হেনস্তার শিকার হলে র্যাব কন্ট্রোল রুম ও র্যাব টহল দলকে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।