যোগাযোগমন্ত্রী ও র্যাবপ্রধান পরিচয়ে প্রতারণা, আটক ৩
যোগাযোগমন্ত্রী ও র্যাবপ্রধান পরিচয়ে মুঠোফোনে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করার ঘটনায় তিনজনকে আটক করছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
আজ রোববার দুপুরে বরিশাল জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে ডিবি পুলিশের এক সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানানো হয়।
আটক ব্যক্তিরা হলেন ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ব্রাহ্মণপাড়া গ্রামের পরিমল বাছাড় (৪০), সবুজ মণ্ডল (১৯) ও অমিত বাছাড় (১৮)।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মগর গ্রামের লেবানন প্রবাসী মো. মামুনের স্ত্রী কলি আক্তার গত ২৫ মার্চ বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপাশা গ্রামে তাঁর বোন আম্বিয়া বেগমের বাড়িতে বেড়াতে যান। ওই দিন একটি মুঠোফোন থেকে তাঁর নম্বরে কল দিয়ে অজ্ঞাতনামা এক নারী জানান, র্যাবের প্রধান তাঁর সঙ্গে এখন কথা বলবেন। এ সময় ওই ব্যক্তি আটক সবুজ মণ্ডল ২৫ হাজার টাকা দাবি করে বলেন, দাবি করা টাকা না পেলে বিদেশে থাকা তাঁর স্বামীর ক্ষতি সাধন করা হবে। এরপর তিনি দ্রুত ২৪ হাজার ৫০০ টাকা প্রতারকদের দেওয়া বিকাশ নম্বরে পাঠিয়ে দেন। এর কিছুক্ষণ পরে কলির মুঠোফোনে নিজের নম্বর থেকে কল এলে তিনি হতবাক হয়ে যান। কলটি রিসিভ করার পর আটক পরিমল বাছাড় নিজেকে যোগাযোগমন্ত্রী পরিচয় দিয়ে তাঁর প্রবাসী স্বামীকে খুন করার ভয় দেখিয়ে ৫৫ হাজার টাকা দাবি করেন। এরপর তিনি প্রতারকচক্রের দেওয়া আরো তিনটি নম্বরে বিকাশের মাধ্যমে পুরো টাকা পাঠিয়ে দেন। পরে বিষয়টি কলি তাঁর নিকট আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পারেন তিনি প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়েছেন। এরপর তিনি গত ১৬ এপ্রিল অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে বাকেরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলার ভিত্তিতে বরিশাল জেলা ডিবি পুলিশের একটি দল বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে প্রতারকদের শনাক্ত করে। পরে ভাঙ্গা উপজেলার ব্রাহ্মণপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিন প্রতারককে আটক করে।
ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) তুষার কুমার মণ্ডল জানান, অভিযানের প্রথমে তাঁরা টাকা উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত অমিত বাছাড়কে আটক করেন। পরে তার মাধ্যমে অবস্থান শনাক্ত করে শনিবার দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে যোগাযোগমন্ত্রী পরিচয়দানকারী পরিমল বাছাড় ও র্যাবপ্রধান পরিচয়দানকারী সবুজ মণ্ডলকে আটক করা হয়। আটককৃতদের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা ও চারটি মোবাইল ফোনসেট উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতারকরা এসব ঘটনায় একটি আধুনিক সফটওয়ার ব্যবহার করেছে বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বরিশাল জেলা পুলিশ সুপার এস এম আক্তারুজ্জামানসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।