ঢাবিতে পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষ, সাংবাদিকসহ আহত ১১
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভিসি চত্বর এলাকায় কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়েছে পুলিশ। এতে অন্তত দুই শিক্ষার্থী গুলিবিদ্ধ ও নয় সাংবাদিক আহত হয়েছেন। আজ বুধবার (১৭ জুলাই) বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
বিকেল চারটার পরপর কোটা সংস্কারপন্থিরা ভিসি চত্বরে ছয়টি কফিন সামনে রেখে গায়েবানা জানাজা পড়েন। জানাজা শেষে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে টিএসসির দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় পুলিশ টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। আন্দোলনকারীরাও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে কলাভবনের সামনে অবস্থান নেন। কিছুক্ষণ পরে তারা আবার ফিরে আসেন ভিসি চত্বরে। পরে পুলিশ আবারও সাউন্ড গ্রেনেড আর টিয়ারশেল ছুড়ে তাদের সরিয়ে দেন। কিছুক্ষণ পরে আবারও শিক্ষার্থীরা ভিসি চত্বরে অবস্থান নেন।
এবার শিক্ষার্থীরা ভিসি চত্বরে বসে পড়েন। সে সময় আন্দোলনকারীরা পুলিশের উদ্দেশে স্লোগান দিতে থাকেন, ‘গো ব্যাক, গো ব্যাক’, ঢাবির ক্যাম্পাসে গুলি কেন, জবাব চাই জবাব চাই’সহ নানান স্লোগান দেন। সে সময় আবারও পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল ছোড়ে। এ দফায় দফায় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট আর টিয়ারশেলে অন্তত ৯ জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হন দুই শিক্ষার্থী।
এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, পুলিশ টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করায় আহত হয়ে ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে এসেছেন নয় সাংবাদিক। একইসঙ্গে গুলিবিদ্ধ হয়ে এসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী। তারা হলেন আফসানা জুঁই ও আব্দুল হান্নান মাসুদ।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, তারা গায়েবানা জানাজা শেষে শান্তিপূর্ণভাবে কফিন মিছিল নিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তাদের লক্ষ্য করে দুইদিক থেকে পুলিশ টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়া হয়।
আহত সাংবাদিকেরা হলেন- যমুনা টিভির রিপোর্টার ভাস্কর ভাদুড়ী, কালবেলার আকরাম হোসাইন ও জনি রায়হান, আজকের পত্রিকার মোজো রিপোর্টার শাবিব, এসএ টিভির মোজো রিপোর্টার রহমত উল্লাহ, চ্যানেল এস-এর সাংবাদিক সুলাইমান কবির, আলোকিত প্রতিদিনের বিশেষ প্রতিনিধি ইমরান হোসেন ও নিউজ প্রভাতের নিজস্ব প্রতিবেদক হুমায়ুন আহমেদ।
এ ছাড়া, একই এলাকায় কোটা আন্দোলনকারীদের মারধরে আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন সময় টিভির চিত্রগ্রাহক রতন।
তারও আগে, টিএসসি এলাকা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আক্তার হোসেনসহ দুজনকে আটক করে পুলিশ। তাকে আটক করার সময় অন্তত পাঁচটি সাউন্ড গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটায় পুলিশ।