মাদারীপুরে ধাওয়া খেয়ে লেকের পানিতে ডুবে নিহত ১, নিখোঁজ ২
মাদারীপুরে কোটা সংস্কারপন্থি শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ ও ছাত্রলীগের হামলার অভিযোগ উঠেছে। শিক্ষার্থীদের দাবি, পুলিশের সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা ধাওয়া করে এ হামলা চালান। পাল্টা হামলা চালিয়ে পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যান ভাঙচুর করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় পুলিশ-ছাত্রলীগের ধাওয়া খেয়ে লেকের পানিতে ডুবে একজনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে আরও দুজন। এ সংঘর্ষে ১০ পুলিশ সদস্য, ২ সংবাদকর্মীসহ আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে মাদারীপুরের শেখ হাসিনা মহাসড়কের ডিসি ব্রিজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে শকুনি লেকপাড়, পুলিশ সুপারের বাসভবন, জেলা প্রশাসকের বাসভবনের সামনেও দফায় দফায় সংঘর্ষ চলতে থাকে। দুপুর ১টা পর্যন্ত থেমে থেমে সংঘর্ষ চলছিল। সংঘর্ষের কারণে মাদারীপুর-শরীয়তপুর-চাঁদপুর সড়কপথে যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে।
মাদারীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এএইচএম সালাউদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এএইচএম সালাউদ্দিন জানান, হামলার পর পর পালাতে গিয়ে ঘটনাস্থলে শকুনি লেকে ডুবে তিনজন নিখোঁজ হন। এদের মধ্যে আজ দুপুর ১টা পর্যন্ত দুজনের কোনো খোঁজ মেলেনি। একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সূত্রে জানা গেছে, সকাল ১০টার দিকে মাদারীপুর সরকারি কলেজ, চরমুগরিয়া কলেজ, ইউনাইটেড সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, ডনোভান সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা ইউআই স্কুল মাঠে জড়ো হন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শেখ হাসিনা মহাসড়কের ডিসি ব্রিজ এলাকায় জড়ো হয়ে সড়ক অবরোধ করেন। বেলা ১১টার দিকে তাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে পুলিশ। অন্যদিকে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা–কর্মীরাও তাদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা পুলিশ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। ডিসি ব্রিজ থেকে পুরোনো কোর্ট পর্যন্ত টানা এক ঘণ্টা চলে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া। এ সময় পুলিশ সুপারের বাসভবনের সামনে থাকা পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যানে ভাঙচুর চালান বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ ৪০টি রাবার বুলেট, কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেয়। এতে পুলিশের অন্তত ১০ জন সদস্য, ২ জন সাংবাদিকসহ আহত হন অন্তত ৩০ জন। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।