নরসিংদীতে গুলিবিদ্ধ আরেক শিক্ষার্থীর হাসপাতালে মৃত্যু
নরসিংদীর মাধবদীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত সুমন রহমান অনিক (১৮) অবশেষে মারা গেলেন। আজ শুক্রবার (২৩ আগস্ট) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (পিজি হাসপাতাল) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
সুমন রহমান অনিকের বড় ভাই জুলহাস মিয়া মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন।
নিহত সুমন মাধবদী পৌর শহরের সিদ্দিকনগর মহল্লার মৃত হাসেন আলীর ছেলে। তিনি স্থানীয় জালপট্টি জামেয়া-ই-এমদাদিয়া দাখিল মাদ্রাসার ছাত্র।
নিহত সুমন রহমান অনিকের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তিনি স্থানীয় একটি মাদ্রাসা থেকে আগামী বছর দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা ছিল। পরিবারের হাল ধরতে পড়াশোনার পাশাপাশি তিনি ভাইদের সঙ্গে স্থানীয় বাজারে কাঁচা তরকারি বিক্রি করতেন। তাঁরা ছয় ভাই তিনি বোন। অনিক ছিল সবার ছোট। গত ২০ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে সরকারের জারি করা কারফিউয়ের প্রথম দিনে বন্ধুদের সঙ্গে তিনি বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। ওই দিন ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মাধবদী পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন। এ সময় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে নির্বিচারে গুলি করে। এ সময় তার পেটে গুলি লাগলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। গুলিটি তার পেটে ঢুকে পাকস্থলি ছিদ্র হয়ে পিছন দিক দিয়ে বের হয়ে যায়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে এবং পরে কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর তিনবার অস্ত্রোপচার করা হয়। সম্প্রতি তার পেটে ইনফেকশন হয়ে যাওয়ায় ডাক্তররা তার পেটে আবারও অস্ত্রোপচার করতে হবে বলে জানিয়েছিলেন। পাশাপাশি উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ারও পরামর্শ দিয়েছিলেন তাঁরা। গত বুধবার বিকেলে তাকে কুর্মিটোলা থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানেই আজ সকালে মারা যান তিনি।
নিহত সুমন রহমান অনিকের বড় ভাই জুলহাস মিয়া বলেন, দীর্ঘ ৩৩ দিন ধরে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ভাইটা আমার শহীদ হলো। অনেক কষ্ট হয়েছে তার। চোখের সামনে সব দেখেছি। সান্ত্বনা এটুকুই যে আমার ভাই দেশ স্বাধীন করতে গিয়ে শহীদ হয়েছে। আমরা গরিব মানুষ, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে বেশি টাকা না লাগলেও ওষুধ কিনতে কিনতেই হিমশিম খেতে হয়েছে।