৩৬ হাজার টাকার জন্য খুন করা হয় মা-ছেলেসহ তিনজনকে : পুলিশ
কুমিল্লার হোমনায় মা-ছেলেসহ তিনজনকে শ্বাসরোধ করে হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া যুবক আক্তার হোসেন (২৭) শ্রীমদ্দি চরেরগাঁও এলাকার বাসিন্দা। গতকাল শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে হোমনার শ্রীমদ্দি চরেরগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি পাওনা ৩৬ হাজার টাকার জন্য তিনজনকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জিজ্ঞাসাবাদে আক্তার হোসেন স্বীকার করেছেন যে, মাহমুদার সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের পরিচয় ছিল। মাহমুদার বাবার বাড়ি ও আক্তারের বাড়ি একই গ্রামে। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে আক্তার হোসেনের কাছ থেকে মাহমুদা ৪৪ হাজার টাকা ধার নেন। এর মধ্যে মাহমুদা কিছু পরশোধ করলেও ৩৬ হাজার টাকা বাকি ছিল। সেই টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য সময় নেন মাহমুদা। কয়েক দফা সময় নিয়ে টাকা ফেরত দিতে পারেনি তিনি। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কয়েক দফা বাগ্বিতণ্ডা হয়।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার হওয়া আক্তার হোসেন আরও বলেন, গত বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় পাওনা টাকা ফেরত দেবেন বলে আক্তারকে বাড়িতে ডাকেন মাহমুদা। পরে একসঙ্গে রাতের খাবার খান মাহমুদা, আক্তার, মাহমুদার ছেলে সাহাত ও মাহমুদার ভাতিজি তিশা। এরপর তারা ঘুমিয়ে গেলে গভীর রাতে মাহমুদাকে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করেন আক্তার। পরে আক্তার ধরা পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থেকে সাহাত ও তিশাকেও গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যা করেন। মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য কাঠের টুকরো দিয়ে তাদের মাথায়ও আঘাত করেন আক্তার। এরপর মরদেহ তিনটি খাটের ওপর রেখে পালিয়ে যান আক্তার।
ওসি জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘তিনজনকে হত্যার ঘটনায় নিহত মাহমুদার বাবা বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন৷ মামলা পর ঘটনার রহস্য উদঘাটনে নামে পুলিশ। তদন্তের মাধ্যমে পুলিশ হত্যাকারী আক্তারকে শনাক্ত করে। গত শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে অভিযান চালিয়ে শ্রীমদ্দি চরেরগাঁও এলাকার নিজ বাড়ি থেকে আক্তারকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল শনিবার বিকেলে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়।’
গত বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে কুমিল্লার হোমনার বড় ঘাগুটিয়া এলাকায় শাহপরানের ঘরে তিনজনের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ তিনটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।