ব্যবসায়ীকে ফাঁসাতে ‘অপহরণ নাটক’, ধরা খেলেন ব্যাংকার
এক ব্যবসায়ীকে ফাঁসাতে নিজেই আত্মগোপন করে ঘুরে বেড়িয়েছেন ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায়। এই সুযোগে ভাইকে দিয়ে অপহরণ ও গুমের মামলা করিয়েছেন রাজবাড়ীর ব্যবসায়ী মনোজ কুমার শিকদারের বিরুদ্ধে। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। ২০ মাস পর ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেডের (ইউসিবিএল) কর্মকর্তা জসিম উদ্দিনকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
আজ সোমবার সকালে মাদারীপুরের চরমুগুরিয়া থেকে জসিম উদ্দিনকে উদ্ধার করে রাজবাড়ী পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। তাঁর বাড়ি বড়গুনার বেতাগী থানার উত্তর বেতাগী গ্রামে।
রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার (এসপি) জিহাদুল কবির দুপুরে তাঁর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, জসিম উদ্দিন গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ ইউসিবিএল ব্যাংকে ক্যাশ অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি ২০১৪ সালের ১৭ ডিসেম্বর তাঁর পূর্বপরিচিত রাজবাড়ীর ব্যবসায়ী মনোজ শিকদারের বাড়িতে আসেন। তিনি জেলার ১২ কোম্পানির পণ্য সরবরাহকারী। পরদিন ভোরে তিনি সেখান থেকে কর্মস্থলের পথে রওনা দেন। কিন্তু জসীম উদ্দিন কর্মস্থলে না গিয়ে ভারতে আত্মগোপন করেন। আর তখন থেকেই তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
এ ঘটনার পর জসিম উদ্দিনের বড় ভাই মাহবুব হোসেন বাদী হয়ে রাজবাড়ী সদর থানায় ব্যবসায়ী মনোজ কুমারের বিরুদ্ধে রাজবাড়ী থানায় একটি অপহরণ ও গুমের মামলা করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মনোজ কুমারকে গ্রেপ্তার করেন। পরে রিমান্ডে নেন। ৩০ দিন জেলহাজতে থাকার পর উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান মনোজ।
কিন্তু মামলাটির সত্যতার ব্যাপারে সন্দেহ হওয়ায় পুলিশ জসিম উদ্দিনের পরিবারের ওপর নজর রাখছিল। অবশেষে পুলিশ জানতে পারে, জাসীম উদ্দিন ভারত থেকে এসে মাদারীপুর জেলার চরমুগুরিয়া বাজারে অবস্থান করছেন। সেখান থেকেই গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
এ ব্যাপারে ব্যবসায়ী মনোজ কুমার আজ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘মিথ্যা মামলা দায়েরের পর জসিমের বড় ভাই আমার কাছে ৫০ লাখ টাকা দাবি করে। বলে, টাকা দিলে মামলা তুলে নেওয়া হবে। কিন্তু আমি রাজি হইনি।’
এ ব্যাপারে জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে রাজবাড়ী সদর থানায় মামলা করবেন বলে জানান ব্যবসায়ী মনোজ কুমার।