স্ত্রীসহ ৩ জনকে হত্যার পর লাশ ফেলা হয় যমুনায়
সিরাজগঞ্জের যমুনা নদী থেকে গতকাল সোমবার উদ্ধার হওয়া তিন লাশের পরিচয় জানতে পেরেছে পুলিশ। এরা হলেন গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার টেংরা গ্রামের নাসরিন মণ্ডল (৩০), হাদিকুলের স্ত্রী মেহেরুন আক্তার (৪৮) এবং তাঁর পালিত নাতি জাইমতি (৪)। নাসরিন মেহেরুনের ভাতিজি।
গতকাল সোমবার তিনজনের লাশ উদ্ধারের খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে নিহতের স্বজনরা তাদের শনাক্ত করে।
পরে সিরাজগঞ্জ জেলা পুলিশের দেওয়া তথ্য মতে গাজীপুর জেলা পুলিশ রাতেই শ্রীপুর থেকে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। এঁরা হলেন আলামিন (৩২), নয়ন (২০) ও রবিউল (২২)। আলামিন ও নয়নের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলায়। আর রবিউলের বাড়ি জয়পুরহাটে।
আজ মঙ্গলবার জেলা পুলিশ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়ে পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ দাবি করেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। এখন তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
নিহতদের পরিবারের সদস্যরা জানায়, নিহত তিনজন গত রোববার চিকিৎসক দেখানোর জন্য বাড়ি থেকে বের হয়। পরে তারা শ্রীপুরের গরগরিয়া মাস্টার বাড়ি এলাকায় যায়। এর পর থেকেই তাঁরা নিখোঁজ ছিলেন।
খুনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে জেলা পুলিশ সুপার জানান, গত রোববার দুপুর ১২টায় নাসরিন তাঁর তৃতীয় স্বামী আলামিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গরগারিয়া মাস্টার বাড়ির একটি কাপড়ের দোকানে যান। এ সময় তাঁর সঙ্গে মেহেরুন নেছা ও শিশু জাইমতিও ছিল। নাসরিন আগের দুই স্বামীকে তালাক দিয়ে আলামিনের সঙ্গে সংসার করছিলেন। আলামিন ওই দোকানে ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করেন। সিরাজগঞ্জে তাঁর আরেক স্ত্রী রয়েছে।
একপর্যায়ে আলামিনের সঙ্গে নাসরিনের কথা কাটাকাটি হয়। তখন আলামিন নাসরিনকে আলাদা একটি কক্ষে ডেকে নিয়ে যায় এবং তাঁর সহযোগীকে নিয়ে নাসরিনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে এ ঘটনা যাতে কেউ জানতে না পারে সেজন্য মেহেরুন ও জাইমতিকেও একই কায়দায় হত্যা করে। পরে তিনটি লাশ বস্তায় ভরে গাড়িতে করে সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীতে ফেলে দিয়ে আসে।
গতকাল রাতে আলামিন, নয়ন ও গাড়িচালক রবিউলকে গ্রেপ্তার করা হয়। গাড়িটির মালিক আলামিনের দোকান মালিক। লাশ ফেলার কাজে এই গাড়িটি ব্যবহার করা হয়। সেই গাড়িটিও উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ সুপার।