ব্যাটসম্যানদের আত্মসমর্পণে বাংলাদেশের হার
গল টেস্টে ২৫৯ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। ৪৫৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে রঙ্গনা হেরাথের ঘূর্ণিতে বিপর্যস্ত হয়ে ১৯৭ রানে অল আউট হয় মুশফিকের দল। হেরাথ ছয় উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং মেরুদণ্ড ভেঙে দেন।
চতুর্থ দিন তামিম-সৌম্যর লড়াই দেখে শেষে মনে হচ্ছিল, গল টেস্টে ড্র করাটা অসম্ভব হবে না বাংলাদেশের জন্য। কোনো উইকেট না হারিয়ে ৬৭ রান তুলে নিয়েছিল টাইগাররা। তবে পঞ্চম দিনের শুরুতেই পথ হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। লঙ্কান স্পিনারদের সামনে টানা উইকেট হারিয়ে বসে মুশফিকবাহিনী।
দিনের প্রথম বলটাতেই আউট হতে যাচ্ছিলেন সৌম্য সরকার। গুনারত্নের করা সেই বলটি খেলবেন না ছাড়বেন এমন দোটানায় শেষ পর্যন্ত ব্যাটে লেগে বল উঠে যায়। শর্ট লেগে দাঁড়ানো ফিল্ডারও বুঝতে পারেননি। বল তাঁর মাথার কয়েক ইঞ্চি ওপর দিয়ে চলে গেলে সে যাত্রায় বেঁচে যান সৌম্য। তবে দ্বিতীয় বলে আর রক্ষা পাননি বাংলাদেশি ওপেনার। ক্লিন বোল্ড হয়ে ফিরে আসেন দল ও নিজের স্কোরে আর এক রানও যোগ না করেই।
এর মাত্র দুই ওভার পরই দিলরুয়ান পেরেরার বলে লেগ বিফোর হন মমিনুল হক। রিভিউ নিলেও রক্ষা পাননি মমিনুল। বাংলাদেশের রান তখন ৮০। চতুর্থ দিনের সঙ্গে আর মাত্র ১৩ রান যোগ করতেই দুই উইকেট হারাল সফরকারীরা।
এরপর তামিমও ফিরেন অল্প রানে। গত দিনের সঙ্গে আর ৬ রান করতেই ক্যাচ দিয়ে বসেন তামিম। বাংলাদেশি ওপেনার বিদায় নেওয়ার বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানও আউট হন। মাত্র ৮ রান করেন সাকিব। সাকিব বিদায় নেওয়ায় পর দুই বলের ব্যবধানে কোনো রান না করেই আউট হন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বাংলাদেশের রান তখন মাত্র ১০৪।
রিয়াদ আউট হবার পর মুশফিক ও লিটন দাস মিলে খানিকটা প্রতিরোধ গড়েছিলেন। তবে দলীয় ১৫৮ রানে সান্দাকানের বলে আউট হন মুশফিক। এরপর স্কোরবোর্ডে ৮ রান যোগ হতেই ফিরে যান লিটন দাস। মুশফিক ৩৪ ও লিটন ৩৫ রান করেন। এরপর তাসকিন, মুস্তাফিজ ও মিরাজকে আউট করে টাইগারদের ইনিংসটা গুটিয়ে দেন হেরাথ।
গতকাল বৃহস্পতিবার জয়ের জন্য বাংলাদেশের সামনে ৪৫৭ রানের পাহাড় রাখে শ্রীলঙ্কা। টেস্ট ক্রিকেটে ৪১৮ রানের বেশি তাড়া করে জয়ের রেকর্ড নেই। ২০০৩ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অ্যান্টিগা টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার দেওয়া ৪১৮ রান তাড়া করে জিতেছিল ক্যারিবীয়রা।
দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে গতকাল দারুণ করেছিল বাংলাদেশ। বিনা উইকেটে ৬৭ রান তুলে নেয় মুশফিকের দল। সৌম্য সরকার ৫১ এবং তামিম ইকবাল ১৩ রানে অপরাজিত ছিলেন।
৪৫৮ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে তামিম রয়েসয়ে খেললেও সৌম্য সরকার খেলছেন নিজের মতোই। দিলরুয়ান পেরেরা ও রঙ্গনা হেরাথকে সাবলিলভাবে খেলেছেন এই ব্যাটসম্যান। মাত্র ৪২ বলে টেস্ট ক্যারিয়ারের তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন তিনি। তামিম ড্রয়ের উদ্দেশ্যে খেললেও সৌম্যকে দেখে মনে হয়েছে ৪৫৮ রানের পাহাড় ডিঙাতে প্রস্তুত তিনি। আলোক-স্বল্পতার কারণে চতুর্থ দিনের খেলা বন্ধ রাখা হয়।