ভাস্কর্য অপসারণের প্রতিবাদকারীদের নামে মামলা
সুপ্রিম কোর্টের সামনে ন্যায়বিচারের প্রতীক হিসেবে স্থাপিত ভাস্কর্য সরানোর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিলের সময় গ্রেপ্তার চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে রাজধানীর শাহবাগ থানায় সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগ এনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল হাসান এনটিভি অনলাইনকে জানান, সরকারি বাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে গতকাল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোফাখ্খারুল ইসলাম এই মামলাটি করেন। আজ শনিবার গ্রেপ্তার চারজনকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে পাঠানো হয়েছে।
মামলার আসামিরা হলেন- ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক লিটন নন্দী, ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা কলেজ শাখার সভাপতি আবদুল হালিম, লালবাগ থানার সভাপতি রামিম জয় এবং বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর নেতা আরিফ নূর।
ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি জিলানী শুভ সকালে এনটিভি অনলাইনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আরো জানান, তাঁরা আদালতে জামিন চাইবেন।
এ দিকে গ্রেপ্তার ও মামলার প্রতিবাদে আজ সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক জামসেদ আনোয়ার তপন। তিনি জানান, আজ সারা দেশে বিক্ষোভ হবে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকায় বিকেল ৪টায় শাহবাগ মোড়ে সমাবেশ হবে।
বহু আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে হঠাৎ করেই ভাস্কর্য অপসারণ করা হয়। এর প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার দুপুরে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলোর জোট প্রগতিশীল ছাত্র জোটসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দিকে অগ্রসর হলে পুলিশ তাদের ওপর চড়াও হয়। দফায় দফায় জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়। আটক করা হয় চারজনকে। এতে ২০ জন আহত হয়েছে বলে দাবি করে বিক্ষোভকারীরা।
গত ফেব্রুয়ারি থেকে সুপ্রিম কোর্টের সামনে ‘গ্রিক দেবীর মূর্তি’ স্থাপন করা হয়েছে—এমন দাবি করে এর অপসারণের দাবি করে আসছিল হেফাজতে ইসলামসহ ধর্মভিত্তিক নানা সংগঠন।
এ বছরের রমজানের আগে ভাস্কর্য অপসারণের সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছিল ওই সব সংগঠন। এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে অপসারণ করা হয়েছে শিল্পী মৃণাল হকের গড়া ভাস্কর্যটি।
অপসারণের খবর পেয়ে মধ্যরাতেই সুপ্রিম কোর্টের গেটের সামনে জড়ো হন প্রতিবাদকারীরা। এ সময় আদালতের দরজা ভাঙার চেষ্টা করেন তাঁরা।