শেরপুরে এক রাতে তিন লাশ
শেরপুরে এক রাতে তিনজনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সদর, নালিতাবাড়ী ও শ্রীবরদী উপজেলা থেকে এসব লাশ উদ্ধার করা হয়। এ সময় পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহতরা হলেন সদরের বুড়িয়ারপাড়ের আক্কাছ আলী (৫৫), নালিতাবাড়ীর বাতকুঁচি গ্রামের সাদির আলী (৫৬) ও গাজীরখামারের সাইদ আলী (৩২)।
শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জানান, জেলা সদরের বুড়িয়ারপাড় এলাকার আক্কাছ আলী এক বছর আগে আনার মিয়া নামের এক ব্যক্তির কাছে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা বিক্রি করেন। কিন্তু সে সময় অটোরিকশাটি বিক্রির কোনো লিখিত কাগজপত্র দেননি।
বৃহস্পতিবার রাতে আনার মিয়া কয়েকজন লোক নিয়ে অটোরিকশার কাগজপত্র নিতে আক্কাছ আলীর কাছে যান। এ সময় আক্কাছ আলী একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে থাকায় পরে কাগজপত্র দেবেন বলে জানান। কিন্তু আনার আলী তাৎক্ষণিক কাগজ দাবি করায় উভয়পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে আনার মিয়ার লোকজন নিয়ে আক্কাছ আলীকে বেধড়ক মারধর করে। এতে ঘটনাস্থলেই আক্কাছ আলী মারা যান।
ওসি নজরুল ইসলাম আরো জানান, এ ব্যাপারে শেরপুর থানায় মামলা একটি হত্যা মামলা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত আলামিন ও শহিদুল ইসলাম নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে, নালিতাবাড়ী উপজেলার বাতকুঁচি গ্রামে বেয়াইয়ের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে সাদির আলী নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।
নালিতাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফসিহুর রহমান জানান, সাদির আলী ছেলে হোসেন আলীর সঙ্গে পাশের গ্রাম ডালুকোনার আবেদ আলীর মেয়ের বিয়ে হয়। সম্প্রতি হোসেন আলী স্ত্রীকে নিয়ে ঢাকায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু মেয়ে ও জামাইয়ের ঢাকায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি আবেদ আলী।
বৃহস্পতিবার রাতে আবেদ আলী বেয়াইয়ের বাড়িতে যান। বিষয়টি নিয়ে বেয়াই সাদির আলীর সঙ্গে বচসার একপর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে মারধর শুরু হয়। এতে সাদির আলী অজ্ঞান হয়ে যান। তাঁকে নালিতাবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি ফসিহুর রহমান আরো জানান, এ ঘটনায় বেয়াই আবেদ আলী, তাঁর স্ত্রী মাহফুজা বেগম ও মেয়ে আছমাকে আটক করা হয়েছে।
এ ছাড়া শ্রীবরদী উপজেলার পোড়াগড় গ্রাম থেকে সাইদ (৩২) নামের এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম জানান, জামাই সাইদের কাছ থেকে টাকা ধার নিয়ে জমি কেনেন তাঁর শ্বশুর। বৃহস্পতিবার রাতে পাওনা টাকা নিতে শ্বশুরবাড়ি যান সাইদ। এ সময় বিষয়টি নিয়ে শ্বশুরের সঙ্গে তাঁর ঝগড়া হয়। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে একটি ঘরে সাইদের লাশ পাওয়া যায়। তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন বলছে, সাইদ আত্মহত্যা করেছেন। কিন্তু সাইদের স্বজনদের দাবি, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে।
ওসি আরো জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।