গগনে মিলিয়ে যেতে চেয়েছিল মুক্তাও!
প্রাচীন হিন্দু সমাজের সহমরণের কথা হয়তো ভুলে যাননি মৃত গগন দেবনাথের (২৮) স্ত্রী মুক্তা দেবনাথ (২২)। তাই হয়তো স্বামীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর পর নিজেও গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন।
আজ রোববার দুপুরে শেরপুরের নালিতাবাড়ী পৌরশহরের গড়কান্দা মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে।
দুপুরে গগন নিজ ঘরে মারা যান। এ সময় তাঁর গলায় দাগ দেখা গেছে। স্বামীর মৃতদেহ দেখে মুক্তা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান। পরে মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গগনের বাবা গণেশ দেবনাথ ও স্বজনরা জানান, আজ দুপুরে গগন ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে শুয়ে ছিলেন। এ সময় তাঁর স্ত্রী মুক্তা বাইরে রান্না করছিলেন। গগনকে ডাকাডাকি করে সাড়া না পাওয়ায় মুক্তা দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে তাঁকে বিছানায় পড়ে থাকতে দেখেন। এরপর মোবাইল ফোনে ব্যাপারটি শ্বশুরকে জানান।
গণেশ দেবনাথ বাড়িতে এসে গগনকে অচেতন দেখতে পেয়ে দ্রুত নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক গগনকে মৃত ঘোষণা করেন। এ খবর পেয়ে মুক্তা গলায় দড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেন। প্রতিবেশীরা তাঁকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে সেখান থেকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গগনের মৃত্যুর ব্যাপারে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক মেহেদী হাসান বলেন, ‘দুপুরে গগন নামের একজনকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তাঁর মৃত্যুকে স্বাভাবিক মনে না হওয়ায় আমি থানা পুলিশকে খবর দেই।’
গগণের বাবা বলেন, ‘চার মাস আগে গগন ও মুক্তার বিয়ে হয়। তাঁদের মধ্যে ঝগড়াবিবাদ কিছু ছিল না। আজ দুপুরে আমি ও আমার স্ত্রী বাড়িতে ছিলাম না। পরে গগনের স্ত্রীর ফোন পেয়ে বাড়ি আসি।’
এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সারোয়ার বলেন, ‘ঘটনাটি আমরা শুনেছি। হাসপাতাল থেকে খবর পেয়ে আমরা লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছি। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।’