রাতেই সিল মেরে রাখার অভিযোগ আরিফুলের, তবু আশাবাদী
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরী অভিযোগ করে বলেছেন, রাতেই বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভরে রাখা হয়েছে। তারপরও তিনি আজ সুষ্ঠু ভোট হলে এবং জনগণ ভোট দিতে পারলে ফলাফল যা-ই আসুক, মাথা পেতে নেবেন বলে কথা দিয়েছেন।
আজ সোমবার সকাল ৮টা থেকে সিলেট সিটির ভোট শুরু হয়। এই ভোট চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। সকালেই নিজ কেন্দ্র নগরীর রায়নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন সাবেক এই মেয়র। তারপরই তিনি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন ভোট নিয়ে।
এ সময় আরিফুল বলেন, ‘আমি আমার সেন্টারে ভোট প্রদান করলাম। কিন্তু গতকাল রাতে বিদ্যুৎ অফ করে পুলিশ, বিডিআরের নিয়ন্ত্রণাধীন রেখে, আমার কাছে পরস্পর খবর এসেছে, কাজী জালালউদ্দিন-কাজীটুলাতে, ২০ নম্বরে এমসি কলেজ এবং অন্যান্য ওয়ার্ডে রাতেই সিল মেরে প্রিসাইডিং অফিসার সাহেবদের নিয়ে এসে ব্যালটে সিল মেরে রাখা হয়েছে। আমরা অবশ্যই তৎপর আছি। আমরা পরবর্তী কার্যক্রমে এটা দেবো।’
কোন কোন কেন্দ্রে সিল মারা হয়েছে, তার কোনো তালিকা আছে কি না—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এই মেয়র প্রার্থী বলেন, ‘আমি তো বললাম, কাজী জালাল উদ্দিন, প্রাইমারি স্কুল, কাজীটুলাতে রাত্রে সেখানে সমস্ত মানুষ ছিল। ঢুকতে দেওয়া হয় নাই। তাদের বন্দুক দিয়ে দৌড়ানো হয়েছে। তাহলে কেন রাত্রে সেন্টার তালা মারা থাকবে, পাহারা থাকবে, সকালে ভোটকেন্দ্র খুলে দেওয়া হবে, ভোট হবে। রাত্রেই এত লোক কারা ঢুকল, কেন ঢুকল। লাইট জ্বালিয়ে সে কী কাজ করল? আমি চ্যালেঞ্জ করি, আপনারা যদি প্রিসাইডিং অফিসারের আলমিরা চেক করে পেয়ে যাবেন।’
‘তবে এটা যত বড় শক্তি হোক, আমরা যদি উদ্ঘাটন করতে পারি, কোনো অবস্থাতে যা হওয়ার হবে। আমরা এই অন্যায়কে আন-চ্যালেঞ্জ ছাড়ব না ইনশাআল্লাহ। আর ভোটকেন্দ্র যদি ভালোভাবে, যারা এখানে ঢাকা থেকে ফোর্স আসছে, যদি বিশেষ মতলব নিয়ে আসে অফিসাররা, তাহলে এটা কিন্তু দুঃখজনক হবে। এই পবিত্র মাটিতে এটা কোনোভাবে বরদাশত করা হবে না।’
এর পরও নিজের জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী বলে জানান আরিফুল। তিনি বলেন, ‘আমি আশাবাদী, শত বাধার পরও সিলেটের ভোটাররা তাদের ভোট প্রয়োগ করবেন। ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশন যদি হয়, আমি আগেই বলেছি, আপনারাও ফিল্ডে দেখেছেন, ইনশাআল্লাহ বিজয় আমাদের সুনিশ্চিত।’
জনগণের রায় মেনে নেবেন কি না—এমন এক প্রশ্নের জবাবে ধানের শীষের প্রার্থী বলেন, ‘আমরা তো সব সময় জনগণের রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমি তো আগেই বলেছি, এখন ভোট যদি আগেই অন্য কেউ দিয়ে থাকে, তাহলে তো জনগণের ভোট দেওয়া হলো না। জনগণের ভোটে যে রায় হবে, আমি মাথা পেতে নেব এবং স্যালুট করব।’
ভোটের মাঠে শেষ পর্যন্ত থাকবেন কি না—জবাবে আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, ‘এটা কী বললেন, শাহাদাতবরণ করব, মাঠ ছাড়ব না। কাউকে যেতে দেবো না।’
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে সাতজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান (নৌকা), বিএনপির আরিফুল হক চৌধুরী (ধানের শীষ), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ডা. মো. মোয়াজ্জেম হোসেন খান (হাতপাখা), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) মো. আবু জাফর (মই) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী এহসান মাহবুব জোবায়ের (টেবিল ঘড়ি), মো. এহসানুল হক তাহের (হরিণ) ও মো. বদরুজ্জামান সেলিম (বাস)। তিন সিটিতে ৫৩০ জন কাউন্সিলর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সিলেট সিটি করপোরেশনে তিন লাখ ২১ হাজার ৭৩২ জন ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার লাখ ৭১ হাজার ৪৪৪ ও নারী ভোটার এক লাখ ৫০ হাজার ২৮৮ জন।