১৮ বছরেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি চান্দিনা পৌরসভায়
কুমিল্লার চান্দিনা পৌরসভার সড়কগুলোতে একটু বৃষ্টি হলেই পানি জমে যায়। এতে পৌরসভার বাসিন্দাদের এসব সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে গিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
পৌর বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিনেও প্রধান সড়কসহ পৌরসভার অধিকাংশ সড়ক সংস্কার হয়নি। এসব সড়কের বিভিন্ন স্থান ভেঙে গেছে। সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্তের। রিকশা, অটোরিকশাসহ অন্যান্য যানবাহন নিয়ে এই সড়কে যাতায়তে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে চান্দিনা বাজারের উপর দিয়ে পৌরসভার প্রধান সড়কটির দীর্ঘ দিন ধরে খুবই করুন দশা। সড়কের দুই পাশে ড্রেন থাকলেও তা নির্মান করা হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে। এই ড্রেনগুলো সড়কের চেয়ে অপেক্ষাকৃত উপরে হওয়ায় একটু বৃষ্টি হলেই পৌরসভার প্রধান সড়ক মৎস্যশূন্য খালে পরিনত হয়ে যায়।
আর এর কারণে আশেপাশে স্কুল,কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ পথচারীরা পড়েন চরম ভোগান্তিতে। সড়কের উভয় পাশে বিভিন্ন নির্মানসামগ্রী, স্থাপনা ও ব্যবসায়িক কাজের জন্য রাখা তেল ও পানির ড্রাম, গ্যাস সিলিন্ডার, ফুটপাতে দোকান এবং সিএনজি ও ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা ইত্যাদির কারণে যানজট এবং ভোগান্তি এখন নিত্য সঙ্গী। অন্যদিকে শাখা সড়কগুলোর অবস্থাও বেহাল।
পৌরসভার তালিকা অনুযায়ী ওয়ার্ডগুলোতে মোট ২৫টি ডাস্টবিন থাকলেও বাস্তবে একটির হদিস নেই। ১টি শিশু পার্ক তালিকায় থাকলেও বর্তমানে সেটিও পরিত্যক্ত। সড়কবাতিগুলোর একটিও জ্বলে না এখন। বাজারগুলোতে নেই গরু জবাই করার কোন নির্ধারিত স্থান। ফলে কসাইরা বাধ্য হয়ে প্রতিদিন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে নর্দমায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে গরু জবাই করছেন।
এ বিষয়গুলো নিয়ে জানতে বর্তমান পৌর মেয়র শাহ মো. আলমগীর খানের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করে তাঁকে পাওয়া যায়নি। চান্দিনা পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কাজী জাফর উল্লাহ আজাদ এনটিভি অনলাইনকে জানান, চান্দিনা বাজারের উপর দিয়ে পুরাতন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) আওতায় হওয়ায় পৌরসভা কর্তৃপক্ষ এর সংস্কার করতে পারছেন না।
তিনি আরো জানান, এরই মধ্যে পৌরসভায় পরিছন্নতার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এবং চান্দিনা বাজারকে যানজট মুক্ত রাখতে সড়কের উপর নির্মিত সকল অবৈধ দোকান ও সিএনজি অটোরিক্সা ষ্টেশনগুলো অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ ছালেহ আহাম্মদ বিষয়টি নিয়ে জানান, অবৈধ দোকান অপসারণ এবং সড়কে মালামাল না রাখার বিষয়টি নিয়ে বহুবার বাজার কমিটির সাথে বৈঠক করা হয়েছে। কদিন ঠিক থাকলেও এর পর পরিস্থিতি আগের বেহাল অবস্থায় ফিরে যায়।
এছাড়া একাধিকবার মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে যানজট মুক্ত রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্ত এই অবৈধ দোকানীরা বাজার কমিটি এবং স্থানীয় প্রভাবশালী লোকের ছত্রছায়ায় থাকার কারণে এদের সরানো কঠিন। তিনি জানিয়েছেন, অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে আমাদের প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করে যাব।