বাল্যবিবাহে রাজি না হওয়ায় মারধর, ছাত্রীর ‘আত্মহত্যা’
লক্ষ্মীপুরে বাল্যবিবাহে রাজি না হওয়ায় মারধর করায় বিষপান করে আত্মহত্যা করেছে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রী। নিহত ছাত্রীর নাম ইয়াসমিন আক্তার (১৫)। বুধবার সকালে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়।
ইয়াসমিন লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের ইসমাইল হোসেনের মেয়ে। সে সৈয়দপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ত।
স্থানীয়রা জানায়, ইয়াসমিন গত বছর জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে পাস করতে পারেনি। এরজন্য একই শ্রেণিতে পড়ালেখা করছে। এর মধ্যে বাবা ইসমাইল ও মা লাকী বেগম তাকে বিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করে। একপর্যায়ে ফুফাতো ভাই কুয়েত প্রবাসী রাশেদের (৩৫) সঙ্গে বিয়ে দেওয়ার জন্য তাকে চাপ সৃষ্টি করা হয়। রাশেদ উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের সমাসপুর গ্রামের মোস্তফা মিয়ার ছেলে। তিনি এর আগেও বিয়ে করেছেন। প্রায় তিন বছর আগে পারিবারিক কলহের জের ধরে তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়।
এদিকে বিয়েতে রাজি না হওয়ায় ১৬ সেপ্টেম্বর রাতে ওই ছাত্রীকে তার মা-বাবা মারধর করেন। এতে অভিমান করে পরের দিন ১৭ সেপ্টেম্বর সকালে সে বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। পরিবারের লোকজন দেখতে পেয়ে তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি ঘটলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
বুধবার দুপুরে ইয়াসমিনের মরদেহ উপজেলার দত্তপাড়ার সৈয়দপুরের বাড়িতে আনা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
দত্তপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও সৈয়দপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আহসানুল কবির রিপন বলেন, বাল্যবিবাহ দেওয়ার জন্য ওই ছাত্রীকে পরিবারের পক্ষ থেকে চাপ দেওয়া হয়। এতে অভিমান করে বিষপান করে সে আত্মহত্যা করে।
দত্তপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের উপপরিদর্শক (এসআই) মজিবুর রহমান বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।