ফরিদপুরে স্বপ্নের ঠিকানা ‘স্বপ্ননীড়’
ফরিদপুরের শহরতলীর পাশেই ঈশানগোপালপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রাম। আর এই গ্রামেই তৈরি হচ্ছে সারি সারি লাল টিনের ছাওনিতে গড়া একতলা সেমি পাকা ঘর। অসহায়, ঘর ও জমিহীন মানুষের জন্যই সরকারের মুজিববর্ষের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে গড়ে উঠছে স্বপ্নের রঙে আঁকা ‘স্বপ্ননীড়’।
শুধু বিষ্ণুপুর গ্রামেই নয়, জেলার প্রতিটি উপজেলার সরকারের খাস জমিতে জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় গড়ে উঠছে এক হাজার ৪৭০টি বসতঘর। একটি ছোট্ট ঘর যেন ঠিকানাহীন এসব মানুষের জন্য বিশাল স্বপ্ন। আর কয়েক দিন পরই তাদের কোলাহলে মুখরিত থাকবে স্বপ্ননীড়ের প্রতিটি উঠোন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনায় সারা দেশের মতো ফরিদপুরেও ভূমিহীন ও গৃহহীনদের পুনর্বাসনের জন্য নির্মিত হচ্ছে এক হাজার ৪৭০টি বসতঘর। ২০২১ সালের ১৫ জানুয়ারির মধ্যেই ঘর তৈরির কাজ সম্পন্ন হতে পারে। জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের নেতৃত্বে নয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনারদের (ভূমি) তদারকিতে গড়ে উঠছে এসব ‘স্বপ্ননীড়’। মাঠ পর্যায়ে উপজেলা প্রশাসনের বাস্তবায়নাধীন এসব ঘর করতে সব মিলিয়ে খরচ হচ্ছে প্রায় ২৫ কোটি ৭২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। প্রতিটি ঘরের জন্য বরাদ্দ এক লাখ ৭৫ হাজার টাকা। দুই কক্ষ বিশিষ্ট ঘরটি হবে ২০ ফুট বাই ২২ ফুট।
‘আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার’ স্লোগানে সাড়া দিয়ে জেলার প্রতিটি ভূমিহীন ও ঘরহীন পরিবারের জন্য এসব আবাসন তৈরি করা হচ্ছে। জেলার সদর উপজেলায় ২৯২টি, আলফাডাঙ্গায় ২২০টি, বোয়ালমারীতে ৯২টি, মধুখালীতে ১৪৮টি, নগরকান্দায় ১০৫টি, সালথায় ৩৫টি, ভাঙ্গায় ২৫০টি, সদরপুরে ১৭৮টি ও চরভদ্রাসন উপজেলায় ১৫০টি ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। শুধু ঘর নয়, ঘরের প্রতি পরিবারকে দেওয়া হচ্ছে দুই শতাংশ করে জমি।
ঘর নির্মাণে সার্বক্ষণিক নির্দেশনা দিচ্ছেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার। দিন রাত তিনি ছুটে চলছেন এসব ঘর তদারকিতে।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাসুম রেজা বলেন, ‘জেলা প্রশাসক অতুল সরকারের নেতৃত্বে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনারদের (ভূমি) তত্ত্বাবধায়নে গড়ে উঠছে আশ্রয়হীন মানুষের এসব স্বপ্নের ঠিকানা ‘স্বপ্ন নীড়’। স্থানীয় সংসদ সদস্যরাসহ উপজেলা ও ইউপি চেয়ারম্যানরাও এগিয়ে এসেছেন এই কর্মযজ্ঞে। কাজের অগ্রগতি তদারকি করছেন জেলা প্রশাসক এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকরাও।’
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসহায় পরিবারের জন্য এসব আশ্রয়স্থল উপহার দিচ্ছেন। এই কাজ বাস্তবায়নে উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তারা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।’
জেলা প্রশাসক আরো বলেন, ‘উপকার ভোগীদের মধ্যে এই ঘর প্রাপ্তির খবরে যে আনন্দের ঝিলিক দেখতে পেয়েছি, সেই আনন্দাশ্রু আমাদের আগামীর পথচলার প্রেরণা হয়ে থাকবে।’