ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) জাকাত তহবিলের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় জামাতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানির জন্য আগামী ১১ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।

পুরান ঢাকার বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার অস্থায়ী বিশেষ জজ আদালত-১-এর বিচারক সৈয়দা হোসনে আরার আদালতে আজ সোমবার দ্বিতীয় দিনের শুনানি শেষে পরবর্তী শুনানির এ দিন ধার্য করেন আদালত।

এর আগে প্রিজন ভ্যানে করে আজ সকালে আদালতে হাজির করা হয় সাঈদীকে। সকাল ১০টার দিকে শুনানি শুরু হয়।

এ বিষয়ে সাঈদীর আইনজীবী মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, শুনানির সময় আমরা আদালতকে বলেছি, সাক্ষীদের দেওয়া জবানবন্দি আমাদের সরবরাহ করা হয়নি। এ কারণে শুনানির জন্য প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব  হয়নি। পরে আদালত রাষ্ট্রপক্ষকে নথি সরবরাহ করার নির্দেশ দিয়ে মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য ১১ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন। শুনানি শেষে প্রিজন ভ্যানে করে সাঈদীকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

আদালতে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আব্দুস সোবহান তরফদার, মতিউর রহমান আকন্দ ও মুজাহিদুল ইসলাম শাহীন।

এর আগে গত ৭ ডিসেম্বর এ মামলার ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। পরে আজ দিন ধার্য করা হয়।

দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ অর্থ আত্মসাত মামলাটির মোট আসামি ছয়জন। বাকিরা হলেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক মোহাম্মদ লুৎফুল হক, মসজিদ কাউন্সিল ফর কমিউনিটি অ্যাডভান্সমেন্টের সাবেক চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, বন্ধুজন পরিষদের প্রধান সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ ইউনুস, ইসলামী সমাজ কল্যাণ কেন্দ্রের সাবেক সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মসজিদ কাউন্সিলের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুল হক।

আসামিদের মধ্যে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী কারাগারে আছেন। আবুল কালাম আজাদ ও আব্দুল হক পলাতক রয়েছেন। অপর তিন আসামি জামিনে আছেন।

ইফার যাকাত তহবিলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সংশ্লিষ্ট ফাউন্ডেশনের সাবেক পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) আইয়ুব আলী চৌধুরী ২০১০ সালের ২৪ মে শেরেবাংলা নগর থানায় এ মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে দুদকের সহকারী পরিচালক ওয়াজেদ আলী গাজী ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে মামলাটির চার্জশিট দাখিল করেন।

এদিকে, দুই কোটি ২৭ লাখ ৪০ হাজার ১২০ টাকা আয় গোপন করে তার ওপর প্রযোজ্য ৫৬ লাখ ৪৬ হাজার ৮১২ টাকা কর ফাঁকির অভিযোগে ২০১১ সালের ১৯ আগস্ট সাঈদীর বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। পরের বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর সাঈদীর বিরুদ্ধে এই মামলায় চার্জ গঠন করেন আদালত।

মামলার কাগজপত্রের তথ্য অনুযায়ী, জাকাতের এক কোটি ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে সাঈদীসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অর্থ ও হিসাব বিভাগের তৎকালীন পরিচালক আইয়ুব আলী চৌধুরী। মামলাটি তদন্ত করে সাঈদীসহ সাতজনের বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ৩০ এপ্রিল আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন দুদকের সহকারী পরিচালক ওয়াজেদ আলী গাজী।