সরকার কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না : তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিদেশি চ্যানেলের বিজ্ঞাপনমুক্ত সম্প্রচার বা ‘ক্লিন ফিড’ বাস্তবায়নে সরকার কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না। একই সঙ্গে কেব্ল অপারেটরেরা যদি আলোচনা করতে চায়, সে ক্ষেত্রে আইন মানা এবং দেশের স্বার্থ সংরক্ষণের ভিত্তিতে আলোচনা হতে পারে বলেও জানান তিনি।
সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আজ রোববার এ কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বিবিসি, সিএনএন, আল জাজিরা, ফ্রান্স টিভি, রাশান টিভি, ইউরো টিভি, এনিমেল্ট প্ল্যান্টেটসহ ১৭টি চ্যানেল বাংলাদেশে ক্লিনফিডে আসে। সেগুলো অপারেটরেরা চালাচ্ছেন না। তাঁরা কেব্ল অপারেটর লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করছেন। কেউ শর্ত ভঙ্গ করলে অপরাধে অভিযুক্ত হবেন।’
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘যেসব চ্যানেল ক্লিনফিড পাঠায় না, তাদের এজেন্ট আছে। এই দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট চ্যানেল ও এজেন্টের। এটি কেব্ল অপারেটরদের দায়িত্ব নয়। কিন্তু, কোনো কোনো কেব্ল অপারেটর এজেন্টেদের পাশ কাটিয়ে তারা সরাসরি স্যাটেলাইট থেকে পাইরেসি করে ডাউনলিঙ্ক করে। সেটি কিন্তু তারা করতে পারেন না। এটি আইন বহির্ভুত। আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।’
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আরও বলেন, ‘৪ অক্টোবরের পর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে কোয়াব। তাদের এ ধরনের আন্দোলনের কথা বলা অযৌক্তিক। যেসব চ্যানেল দেশের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করছে, সংস্কৃতিকে চোখ রাঙাচ্ছে, সেগুলো পক্ষে ওকালতি করা দেশের স্বার্থ ও আইনবিরোধী। আমি আশা করব, দেশের স্বার্থবিরোধী কার্যক্রমে লিপ্ত হবেন না। সরকার কোনো চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না। সরকার দেশের স্বার্থ ঊর্ধ্বে তুলে ধরার জন্য, আইন বাস্তবায়ন করার জন্য বদ্ধ পরিকর।’
এক প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা কোনো চ্যানেল বন্ধ করিনি, বন্ধ করার জন্যও বলিনি। বাংলাদেশের আকাশ উন্মুক্ত। এখানে যেকোনো চ্যানেল সম্প্রচার করতে পারে, কিন্তু, দেশের আইন মেনে করতে হয়। আইন অনুযায়ী, বাংলাদেশে যেকোনো বিদেশি চ্যানেল বিজ্ঞাপনমুক্তভাবে সম্প্রচার করতে হয়। সব দেশে আইন মেনে চ্যানেলগুলো সম্প্রচার করে। শুধু আমাদের দেশে আইনকে বছরের পর বছর ধরে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদশর্ন করা হচ্ছিল। আমরা আইন বাস্তবায়নের কথা দুই বছর আগে সংশ্লিষ্ট সবাইকে বলেছিলাম। বেশ কয়েক বার তাগাদা দেওয়া হয়েছে, নোটিশ দেওয়া হয়েছে।’
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী আরও বলেন, ‘তারা (কেব্ল অপারেটরেরা) যদি আলোচনা করতে চায়, আলোচনা হতেই পারে। তারা আমাদের সহযোগী, আলোচনা হতেই পারে। তবে, আলোচনার ভিত্তি হবে আইন মানা, দেশের স্বার্থ সংরক্ষণ।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে, দেশের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে, দেশীয় মিডিয়ার স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে আজকে আমরা যখন এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি, দেশের সব মিডিয়া এটিকে অভিনন্দন জানিয়েছে। আমরা এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি দেশের স্বার্থে, দেশের জনগণের স্বার্থে, দেশের মিডিয়া ইন্ড্রাস্ট্রি, সাংবাদিক ও মিডিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিল্পী ও কলাকুশলীদের স্বার্থে। দেশের আইনকে যারা বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে এবং সংশ্লিষ্ট স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে কথা বলে, তারা তো দেশের পক্ষে কথা বলে না।’
‘সরকার কয়েকশ কোটি টাকার রাজস্ব হারায়। এই বিনিয়োগ বঞ্চিত হওয়ার কারণে মিডিয়া থেকে অনেকে ছাঁটাই হচ্ছেন। যখন এই বিনিয়োগটা দেশি মিডিয়ায় হবে, তখন মিডিয়া থেকে ছাঁটাই হওয়াটা বন্ধ হয়ে যাবে, বা সে অজুহাতে ছাঁটাই করা যাবে না। এভাবে পুরো দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে’, যোগ করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।