অস্ট্রেলিয়ায় বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন

Looks like you've blocked notifications!
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছে বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়া। ছবি : সংগৃহীত

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছে বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়া। গত ২০ মার্চ অস্ট্রেলিয়ার ইঙ্গেলবার্নের গ্রেগ পার্সিভাল হলে এই অনুষ্ঠান করা হয়।

এ উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী, নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রিমিয়ার, হাইকমিশনার, কনসাল জেনারেল ও ক্যাম্পবেলটাউন সিটি কাউন্সিলের মেয়রের শুভেচ্ছা বাণী ও স্থানীয় বিশিষ্ট লেখক/লেখিকা ও নবপ্রজন্মের ছোটদের লেখাসহ একটি স্মরণিকা প্রকাশ করা হয়।

অনুষ্ঠান সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি ড. রতন কুন্ডু। সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক রফিক উদ্দিন। সাধারণ সম্পাদক অনুষ্ঠানের তাৎপর্য ও গুরুত্ব ব্যাখা করে আগত অতিথিদের স্বাধীনতার শুভেচ্ছা জানান।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সুফিউর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে সস্ত্রীক উপস্থিত ছিলেন কনসাল জেনারেল খন্দকার মাসুদুল আলম।

পবিত্র ধর্মগ্রন্থ পাঠ, শতকণ্ঠে বাংলাদেশ ও অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সংগীত পরিবেশনা এবং বঙ্গবন্ধুসহ স্বাধিকার আন্দোলন ও ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের আত্মার মাগফেরাত এবং সমৃদ্ধশীল বাংলাদেশ প্রত্যাশায় মহান করুণাময়ের দরবারে দোয়ার মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠান।

অনুষ্ঠানে ‘পাঁচ দশকের বাংলাদেশে শতবর্ষের মুজিব’ সংক্রান্ত একটি নিবন্ধ পাঠ করেন ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. কাইয়ুম পারভেজ। নিবন্ধে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ অর্জনে তাঁর ত্যাগ, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের গৌরবময় অর্জনগুলো তুলে ধরা হয়।

আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়ার সাবেক সভাপতি কৃষিবিজ্ঞানী ড. নিজাম উদ্দিন আহমেদ, আরেক সাবেক সভাপতি ও উলংগং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. খায়রুল হক চৌধুরী, ওয়েস্টার্ন সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মাসুদুল হক ও ড. রফিকুল ইসলাম এবং আওয়ামী লীগের অস্ট্রেলিয়া শাখার সভাপতি সিরাজুল হক।

প্রধান অতিথির ভাষণে সুফিউর রহমান বঙ্গবন্ধু ও বর্তমান বাংলাদেশের ওপর আলোচনা করেন। তিনি বলেন, জাতির জনক তাঁর পুরো জীবনেই দেশকে তথা দেশের মানুষকে ভালোবেসে অপরিসীম কষ্ট ও ত্যাগের মাধ্যমে অভূতপূর্ব দৃষ্টান্ত স্থাপন করে গেছেন, যা পুরো জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে। তিনি আরো বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সফল নেতৃত্বের মাধ্যমে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করতে সক্ষম হয়েছেন। এ উন্নয়নের পেছনে রয়েছে তাঁর দূরদর্শিতা, সঠিক দিক নির্দেশনা ও রাষ্ট্র প্রণীত উন্নয়নের নীতিমালা। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও বর্ণাঢ্য কর্মজীবন পরবর্তী প্রজন্মকে ব্যক্তি জীবনে ধারণ করার ওপরও তিনি গুরুত্ত্বারোপ করেন।

বিশেষ অতিথি খন্দকার মাসুদুল আলম অনুষ্ঠানে আগত বীর মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান তরুণ, হেলাল উদ্দিন, শাহাদাৎ হোসেন ও কৃষিবিদ ওসমান গনিকে ফুল দিয়ে সংবর্ধনা জানান।

আয়োজকদের পক্ষ থেকে কিশোর-কিশোরীরা বিশেষ অতিথি হিসেবে আগত অন্যান্য অতিথি ও ক্যাম্পবেলটাউন সিটি কাউন্সিলের সম্মানিত মেয়রের প্রতিনিধি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কাউন্সিলর মাসুদ চৌধুরীকেও পুষ্পস্তবক দেওয়া হয়।

কনসাল জেনারেল বক্তব্যের শুরুতেই এমন আয়োজনের জন্য বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়াকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন ও আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশের অভ্যুদয় ও তাঁর অগ্রযাত্রায় তাঁরই সুযোগ্য কন্যা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন।

নবপ্রজন্মের কিশোর-কিশোরীদের মধ্য থেকে ইনাম তালুকদার, লামিস সাইয়েদ ও রাইসা হালিম স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের ওপর বক্তব্য দেয়।

মালিক সাফি জাকির মূল পরিকল্পনায় ও বঙ্গবন্ধু পরিষদ অস্ট্রেলিয়ার সাংস্কৃতিক সম্পাদক ফারিয়া নাজিমের সঞ্চালনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দেশের গান পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করেন ফারিয়া নাজিম, রুনু রফিক, নিলুফা ইয়াসমিন, লামিয়া আহমেদ, সীমা আহমেদ, রোমানা হক, ফাইজা কালাম রুবা, সুলতানা নূর, সুমাইয়াত খানও শহিদুল আলমসহ অন্য শিল্পীবৃন্দ।

পূরবী বড়ূয়া বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে স্বরচিত কবিতা ও কবি নির্মলেন্দু গুণের একটি কবিতা আবৃত্তি করেন মুসতাক আহমেদ প্রিন্স। বঙ্গবন্ধুকে উৎসর্গ করে পূরবী পারমিতা বোসের দেশের গানের সঙ্গে অপূর্ব কোরিওগ্রাফি, শিশু শিল্পী রুপন্তি ও প্রতিশ্রুতির ধ্রুপদী নৃত্য দর্শক শ্রোতাদের বিমুগ্ধ করেছে।

সবশেষে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সংগঠনের সব সদস্য, আগত অতিথি ও উপস্থিত শিশু-কিশোরদের সঙ্গে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্য একটি কেক কেটে আগত অতিথিদের নৈশ ভোজের আহ্বান জানিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।