রিয়াদে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে শোকসভা
সৌদি আরবের রিয়াদ দূতাবাসের অধীনস্থ বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল অ্যান্ড কলেজে সম্প্রতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে শোকসভা হয়েছে।
এ সময় জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়। পবিত্র কোরআন পাঠ ও বঙ্গবন্ধুসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শোকসভা শুরু হয়।
শোকসভায় সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয়ের বিওডির চেয়ারম্যান ডা. শেখ মো. এহসানুল হক। বক্তব্য দেন বিওডির ট্রেজারার ডা. মনোজ কুমার দত্ত ও অধ্যক্ষ বজলুর রশিদ চৌধুরী।
মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিওডির সদস্য ডা. মাহামুদুজ্জামন, ডা. আনোয়ার হোসেন, ভাইস প্রিন্সিপাল মোহাম্মাদ আলী ও শিক্ষক মো. আবদুস সোবাহান।
শোক সভার শুরুতেই রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের বাণী পাঠ করেন বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক মশিউর রহমান। প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন শিক্ষিকা সামিনা খানম। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের বাণী পাঠ করেন শিক্ষিকা হাসিনা আক্তার। সভা পরিচালনা ও উপস্থাপনা করেন বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা ফারজানা আলম।
শোকসভার প্রধান অতিথি বিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত রিয়াদ দূতাবাসের ইকোনমিক মিনিস্টার ড. মো. আবুল হাসান বলেন, জাতির পিতাসহ ১৫ আগস্টে শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে শুরু করছি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানেই বাংলাদেশ। তিনি জন্ম না হলে বাংলাদেশের জন্ম হতো না। আজ প্রবাসের বুকে লাল সবুজের পাসপোর্ট নিয়ে এই মঞ্চে বক্তব্য দিতে পারতাম না। বঙ্গবন্ধুর রক্তের ঋণ পরিশোধে আমাদের অনেক দায়িত্ব পালন করতে হবে। জননেত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশের উন্নয়নের সহযাত্রী হতে হবে। আগামীর প্রজন্মের মধ্যে বঙ্গবন্ধুকে জানাতে হবে। এজন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি শেখাতে হবে। প্রবাসী বাংলাদেশি সন্তানদের মধ্যে বাংলা ভাষা ও বাংলা সংস্কৃতির বিস্তার ঘটাতে হবে। ইংলিশ মিডিয়াম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলেও বাংলা বিষয়কে প্রাধান্য দিতে হবে। তা না হলে আগামী প্রজন্ম বাংলাদেশকে ভুলে যাবে।
ড. মো. আবুল হাসান বলেন, বর্তমান শেখ হাসিনার সরকার শিক্ষাবান্ধব সরকার। বছরের প্রথম দিনে হাজার হাজার কপি পাঠ্যবই বিনা মূল্যে বিতরণ করেছে। এই বিদ্যালয়সহ সৌদি আরবের প্রবাসী নয়টি বিদ্যালয়ে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব প্রতিষ্ঠা করেছে সরকার। তথ্যপ্রযুক্তির জ্ঞান সমৃদ্ধির জন্য সব কিছু করছে। এই সরকারের সময় রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহর সহযোগিতায় আমি বিদ্যালয়ে প্রায় পাঁচ বছর দায়িত্ব পালন করেছি। বিগত দিনের তুলনায় বিদ্যালয়টি একটি শৃঙ্খলার মধ্যে এনেছি। এই ধারা আগামীতে সমৃদ্ধ করবেন। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সব সহযোগিতা প্রধানমন্ত্রীর সরকার করবে। রাষ্ট্রদূত সব সময় স্কুলের খোঁজ-খবর রাখেন। যেকোনো সমস্যায় তাঁর সহযোগিতা নিবেন।
শোকসভা থেকে আগস্টে দেশবিরোধী চক্রদ্বারা সংঘটিত ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলায় মহিলা লীগের সভানেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জনের প্রাণহানির তীব্র নিন্দা জানাই এবং তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।
বিদ্যালয়ের বিওডির ট্রেজারার ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ডা. মনোজ কুমার বলেন, ১৫ ও ২১ আগস্ট ঘটনার হোতা একই সিন্ডিকেট। তারা আগস্ট এলেই আওয়ামী লীগ তথা স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির ওপর সন্ত্রাসী আক্রমণ করে। হামলাকারীরা দেশবিরোধী, পাকিস্তানপন্থী। ১৫ আগস্টের স্বঘোষিত পলাতক খুনিদের দেশে ফেরত আনতে হবে। বিচারের শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি।
বিওডির চেয়ারম্যান ডা. শেখ মো. এহসানুল হক বলেন, শেখ হাসিনার সরকার মানবিক ও শিক্ষাবান্ধব সরকার। ১২ লাখ রোহিঙ্গা আশ্রয় দিয়ে বিশ্বে মানবিক প্রধানমন্ত্রী কেবল জননেত্রী শেখ হাসিনা। তাঁর সফল মনিটরিংয়ের জন্য বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপুমনি নকলমুক্ত, প্রশ্নপত্র ফাঁসবিহীন সফল বোর্ড পরীক্ষা নিশ্চিত করেছেন। আগামীতে দেশের বোর্ড পরীক্ষার ফি সরকার বহন করবে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দুপুরে এক বেলা ফ্রি খাবার দেওয়া হবে। প্রবাসের স্কুলগুলোর জন্য নিজস্ব জমি কেনার অর্থ এই সরকার দেবে বলে আশা রাখি। এরই মধ্যে প্রবাসের নয়টি স্কুলের জন্য ১০ কোটি টাকার অনুদান দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এজন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানাই।