মালয়েশিয়ায় মৃত্যুদণ্ড থেকে বেঁচে গেলেন বাংলাদেশি
মালয়েশিয়ায় ১০ বছরের কারাদণ্ড ও মৃত্যুদণ্ডের আদেশপ্রাপ্ত আসামি অলিয়ার শেখকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন দেশটির আদালত। তাঁর বিরুদ্ধে দুই বাংলাদেশিকে হত্যা ও অপর একজনকে গুরুতর জখমের অভিযোগ আনা হয়েছিল।
স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার মালয়েশিয়ার সর্বোচ্চ আদালত ফেডারেল কোর্টের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ দীর্ঘ শুনানির পর অলিয়ারকে খালাস দেন।
মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন অলিয়ার শেখকে দীর্ঘ আট বছর আইনি সহায়তা দেয়। হাইকমিশনের সাবেক শ্রম সচিব মোশাররাত জেবিন ও মোকলেস মামলাটি সব সময় পর্যবেক্ষণ করেন। অলিয়ারকে বাঁচানোর জন্য ব্যক্তিগতভাবে মালয়েশিয়ায় অনেক আইনজীবীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন মোশাররাত জেবিন। চলতি বছরের ২০ নভেম্বর দূতাবাস থেকে বিদায় নিয়ে তিনি বাংলাদেশে চলে আসেন।
এরপরও নিরাশ হননি মোশাররাত। বাংলাদেশে এসেও তিনি চেষ্টা চালিয়ে যান। আইন পেশা জানা থাকার ফলে অলিয়ারকে বাঁচাতে অনেকটা সহযোগিতা করতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি। ওই সময় মোশাররাত জেবিন মালয়েশিয়ার আইনজীবী রাদজি বিন ইয়াতিমামের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর আনীত অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় বুধবার জেল থেকে মুক্তি পান অলিয়ার। মুক্তি পেয়েই ছুটে যান বাংলাদেশ হাইকমিশনে। এ সময় তাঁকে ঘিরে এক আনন্দঘন পরিবেশ তৈরি হয়।
বাংলাদেশ দূতাবাসের লেবার কনস্যুলার সাইদুল ইসলাম মুকুল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত আনন্দিত, অলিয়ার শেখ বেকসুর খালাস পেয়েছেন। সত্যের জয় হয়েছে। বাংলাদেশ দূতাবাস সব সময় প্রবাসীদের কল্যাণে কাজ করে। সমস্যা নিরসনে দূতাবাস সব সময় প্রবাসীদের পাশে থাকবে।’
বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রমকল্যাণ সহকারী মোহাম্মদ মোকসেদ আলী এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা এই মামলা নিয়ে দীর্ঘ সময় আইনি লড়াই করেছি। আজ অলিয়ার শেখকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পেরে সত্যি ভালো লাগছে।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০০৮ সালে গোপালগঞ্জের মোকসেদপুর উপজেলার ছাগলছিরা গ্রামের আওয়াল শেখ ঋণ নিয়ে ও ভিটেমাটি বিক্রি করে কলিং ভিসায় বড় ছেলে অলিয়ার শেখকে মালয়েশিয়ায় পাঠান। মালয়েশিয়ায় গিয়ে একটি পোলট্রি ফার্মে কাজে যোগ দেন অলিয়ার। এক রাতে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা কাদের ও শাহীন নামের দুই বাংলাদেশিকে হত্যা এবং হেলাল নামের অপরজনকে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায়। অলিয়ার শেখ বিষয়টি মালিকপক্ষকে জানাতে যান। এ সময় তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। পরে মালয়েশিয়ার নিগরি সেম্বিলান হাইকোর্ট অলিয়ার শেখকে ১০ বছরের জেলসহ ফাঁসির আদেশ দেন।
মুক্তির পর অলিয়ার শেখকে বাংলাদেশ হাইকমিশনের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়েছে। আউট পাসের মাধ্যমে তাঁকে দ্রুতই দেশে পাঠানো হবে।