নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দ‍র্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।

আপনার জিজ্ঞাসার ১৮৭৫তম পর্বে ঢাকার মিরপুর থেকে কসর সালাত সম্পর্কে  ইমেইলে জানতে চেয়েছেন তারেক। অনুলিখনে ছিলেন জহুরা সুলতানা।

প্রশ্ন : কসর সালাত সম্পর্কে আমি জানতে চাই। আর সেটা হলো, যেমন : আমি ঢাকার বাসিন্দা যদি চট্টগ্রাম সফর করি, পথে তো আমি কসর সালাত পড়ব। কিন্তু চট্টগ্রাম পৌঁছার পরও কি যত দিন আমি সফরের নিয়তে অবস্থান করব তত দিন কসর সালাত পড়ব?

উত্তর : হ্যাঁ, মুসাফির ব্যক্তি যখন থেকে সফর শুরু করবেন তখন থেকে প্রত্যাবর্তন করা পর্যন্ত তিনি মুসাফির। অর্থাৎ তাঁর ঘরে ফিরে আসা পর্যন্ত তিনি মুসাফির। যখন তিনি সফর অবস্থায় থাকবেন এবং মনে করবেন যে তিনি সফরেই রয়েছেন, মুসাফির অবস্থায় আছেন। আপনি চট্টগ্রামে যখন থাকবেন, যেমন : দুইদিন, তিনদিন, ১০ দিন, তখন আপনি মুসাফির হিসেবেই থাকবেন এবং সালাত কসর করবেন। এটাই হলো বিধান।

কিন্তু এখানে একটি বিষয় রয়েছে, সেটা হলো এই যে, কোনো ভূখণ্ডে, কোনো শহরে অথবা কোনো জনপদে যদি কেউ যান এবং তিনি যদি সেখানে অনেকদিন থাকবেন সেটা সংকল্প করেন বা তাঁর নিয়তের মধ্যে থাকে যে তিনি অনেকদিন থাকবেন বা সেখানে তাঁর দীর্ঘ সময় থাকা হবে, সে ক্ষেত্রে চারদিনের অতিরিক্ত সময় যদি কেউ থাকেন তাঁর জন্য একামতের নিয়ত করা উত্তম। কারণ হলো, তিনি দীর্ঘ সময় থাকছেন।

আর বর্তমানে সফর অনেকটা হালকা হয়ে গেছে। যেহেতু সফরের বাশাক্কা বা মূল কারণ অথবা তাহলিল বা যে কারণটাকে লক্ষ্য রেখে কসরের সুযোগ-সুবিধাগুলো দেওয়া হয়েছে, সেটা হচ্ছে কষ্টের জন্য। কিন্তু এখন আপনি সফর করে যখন কোনো শহরে চলে যাবেন তখন সেখানে গিয়ে অনেক বেশি কষ্ট হয় না, কষ্টটা একেবারে লাঘব হয়ে যায়, হালকা হয়ে যায়। আর তিনি যদি সেখানে আত্মীয়স্বজনের কাছে যান তাহলে তো আরো হালকা হয়ে যায়। তিনি সেখানে মেহমান হয়ে যান। সুযোগ-সুবিধা আরো বেড়ে যায়। সে ক্ষেত্রে যদি তিনি অনেকদিন থাকার ইচ্ছে পোষণ করেন, তাহলে উত্তম হচ্ছে তিনি সেখানে মুকিম হিসেবে একামতের নিয়ত করবেন এবং কসর করবেন না। তিনি এতমাম করবেন অর্থাৎ পরিপূর্ণ সালাত আদায় করবেন।

অপরদিকে, যেহেতু তিনি সেখানে গেছেন মূলত নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অথবা ফিরে আসবেন এ জন্য, তিনি যদি একামতের নিয়ত না করে মুসাফির হিসেবে থাকেন, তাহলে তিনি সবসময় কসর করতে পারবেন। এতে কোনো অসুবিধা নেই।

কেউ ১২ দিন, ১৫ দিন, ১০ দিনের কথা উল্লেখ করেছেন। এটি আলেমদের মধ্যে একটা ইজতেহাদি বিষয় ছিল। এই মর্মে স্পষ্ট কোনো হাদিস রাসুল (সা.)-এর দ্বারা সাব্যস্ত হয়নি।