আপনার জিজ্ঞাসা
কেবলার দিকে থুতু ফেলা কি হারাম?

নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
আপনার জিজ্ঞাসার ১৮৯৫তম পর্বে কেবলার দিকে থুতু ফেলা হারাম কি না, সে সম্পর্কে ঢাকার দক্ষিণ দনিয়া থেকে চিঠিতে জানতে চেয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দর্শক। অনুলিখনে ছিলেন জহুরা সুলতানা।
প্রশ্ন : কেবলার দিকে পা প্রসারিত করা, থুতু ফেলা, পিঠ দেওয়া কি গুনাহর কাজ?
উত্তর : কেবলার দিকে পা প্রসারিত করা বা পা লম্বা করা বা পা দেওয়া কোনোটিই গুনাহর কাজ নয়। কিন্তু কেউ যদি উপেক্ষা করে কেবলাকে অবমাননা করার জন্য করে থাকেন, তাহলে অবশ্যই গুনাহ হবে। কারণ, কেবলাকে অবমাননা করার জন্য যদি এ কাজ করে থাকেন এবং স্বাভাবিক অবমাননার বিষয় হয়, তাহলে কিন্তু এটি গুনাহর কাজ হবে।
কিন্তু কেবলার দিকে থুতু দেওয়া হারাম, এটি ভিন্ন মাসয়ালা। খুব কঠিন একটি মাসয়ালা নিয়ে এসেছেন এর সঙ্গে। কেবলার দিকে যদি কেউ থুতু দিয়ে থাকেন, তিনি কিন্তু হারাম কাজ করেছেন। কেয়ামতের দিন সেই থুতু মুখে নিয়ে উঠতে হবে তাকে। এটি অত্যন্ত কঠিন বিষয়। আল্লাহর নবী (সা.) কঠিনভাবে নিষেধ করেছেন।
আর কেবলার দিকে পিঠ দেওয়াও হারাম বা নিষিদ্ধ কাজ নয়। তবে কেবলাকে পশ্চাদ দেওয়ার অর্থ যদি এটা বোঝায় যে, আমি কেবলাকে পিছে ফেলে দিলাম বা কেবলাকে অবমাননা করলাম, তাহলে কিন্তু এ কাজটি হারাম হবে। এর জন্য গুনাহগার হবেন। কিন্তু কোনো কারণে যদি কেবলার দিকে পিঠ দেন, এতে কোনো অসুবিধা নেই, আপনি গুনাহগার হবেন না।
একইভাবে কেউ যদি কেবলার দিকে পা দিয়ে শুয়ে থাকেন, কিন্তু কেবলাকে অবমাননার জন্য নয়, এমনিই শুয়েছেন, তাহলে তাঁর এটা গুনাহ হবে না। কিন্তু যদি ইচ্ছাকৃতভাবে কেবলাকে অবমাননা করার জন্য হয়, তাহলে গুনাহ হবে। যেমন : কেউ কেবলার দিকে পা দিয়ে শুয়ে আছে। একজন এসে বলল, ভাই, আপনি কেবলার দিকে পা দিয়ে আছেন। এখন তিনি উপেক্ষা করে যদি বলেন, কেবলা আবার কী! আমি যেদিকে খুশি পা দিয়ে শুতে পারি। অবজ্ঞার কোনো সুর যদি সেখানে পাওয়া যায়, তাহলে তার এ কাজ হারাম হবে। এতে কোনো সন্দেহ নেই। তিনি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের যে কেবলা আল্লাহ মুসলমানদের জন্য নির্ধারণ করেছেন, সে কেবলাকে অবমাননা করেছেন। তিনি গুনাহগার হবেন। কিন্তু যদি এমন হয় যে, কেবলাকে অবমাননার জন্য নয়, এমনিতেই শুয়ে আছেন, তাহলে তিনি এতে গুনাহগার হবেন না।
যদি হাঁটতে হাঁটতে না জেনে কেবলার দিকে থুতু ফেলেন, তাহলে সেটি হারাম হবে না। কিন্তু যদি জেনেশুনে করেন, তাহলে হারাম হবে। পশ্চিম দিকে হাঁটতে থাকলেও তিনি ডানে-বাঁয়ে বা পেছনে থুতু ফেলবেন, কিন্তু কেবলার দিকে থুতু ফেলতে পারবেন না। জেনে-বুঝে করলে সেখানে যদি অবমাননা না-ও থাকে, তবুও সে এই কাজটি করতে পারবেন না। রাসূল (সা.) এটাকে হাদিসে সরাসরি কঠিনভাবে নিষেধ করে দিয়েছেন।