আপনার জিজ্ঞাসা
গর্ভপাতের শিশুর জন্য জানাজা ও আকিকা দিতে হবে কি?

নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
আপনার জিজ্ঞাসার ১৮৯৬তম পর্বে সাড়ে পাঁচ মাসের বাচ্চা গর্ভপাত হলে তাঁর জন্য জানাজা ও আকিকা দিতে হবে কি না, সে সম্পর্কে ই-মেইলে জানতে চেয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দর্শক। অনুলিখনে ছিলেন জহুরা সুলতানা।
প্রশ্ন : আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ, এ রকম একটি অনুষ্ঠান প্রচার করার জন্য। আল্লাহ আপনাদের ওপর রহমত বর্ষণ করুক। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, ২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আমার স্ত্রীর গর্ভপাত হয়। বাচ্চার বয়স হয়েছিল সাড়ে পাঁচ মাস। এ সময় বাচ্চার হাত-পায়ের গঠন হয়েছিল এবং আমার আম্মার ভাষ্য অনুযায়ী বাচ্চা দেখতে আমার মতো হয়েছিল। এর থেকে প্রমাণ হয় যে বাচ্চার মুখমণ্ডলেরও গঠন হয়েছিল। এলাকার মসজিদের ইমাম সাহেবের সঙ্গে পরামর্শ করে আমার আব্বা বাড়ির পেছনে আমাদের সন্তানকে দাফন করেন গোসল ও জানাজা ছাড়া। সে সময় আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ায় তাড়াহুড়ার কারণে দাফনে উপস্থিত থাকতে পারিনি। ইদানীং একটা ওয়েব লিংক আমাদের নজরে আসে, যেখানে বলা হচ্ছে যে বাচ্চার বয়স সাড়ে চার মাস হওয়ার পর যদি গর্ভপাত হয়, তাহলে জানাজা ও আকিকা দিতে হবে। ওই পেজটিতে আরো বলা আছে যে জানাজা ও আকিকা যদি না হয়ে থাকে, তাহলে তা আর করার দরকার নেই। দয়া করে আমাদের একটু জানান, এই ক্ষেত্রে কোরআন ও সহিহ হাদিসের আলোকে আমাদের এখন জানাজা ও আকিকা করার প্রয়োজন আছে কি? যদি তা করার প্রয়োজন থাকে, তাহলে এখন তা কীভাবে করব?
উত্তর : এই মাসালার ওপর আলেমদের মধ্যে দ্বিমত আছে। হাদিস অনুযায়ী বিশুদ্ধ বক্তব্য হচ্ছে, এ ধরনের অবস্থায় তার জানাজা হবে। কিন্তু আকিকার মাসালাটি শুদ্ধ নয়। আকিকা তার হবে না। আকিকা দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই।
কিন্তু জানাজা যেহেতু দেওয়া হয়নি, সে ক্ষেত্রে এটারও একটা অভিমত রয়েছে। সে অভিমত অনুযায়ী, যেহেতু জানাজা হয়নি এবং দাফন করা হয়েছে, এখন আপনাকে আকিকা করারও কোনো প্রয়োজন নেই। আপনার জানাজারও কোনো প্রয়োজন নেই, যেহেতু তার দাফন কাজ সম্পন্ন হয়ে গেছে।
এর জন্য অতিরিক্ত কোনো চিন্তা করার দরকার নেই। বিভ্রান্ত হওয়ার প্রয়োজন নেই। আপনারা সহজ স্বাভাবিক জীবনযাপন করবেন। আর আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন। সেটাই বোধ হয় উত্তম হবে।