আপনার জিজ্ঞাসা
স্বামীর অজান্তে স্ত্রী কি পড়ালেখা করতে পারবে?

নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড.মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
আপনার জিজ্ঞাসার ১৮৯৯তম পর্বে স্বামীর অজান্তে স্ত্রী পড়ালেখা করতে পারবে কি না, সে সম্পর্কে চিঠিতে জানতে চেয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দর্শক। অনুলিখনে ছিলেন জহুরা সুলতানা।
প্রশ্ন : আমার স্বামীর অন্যান্য আদেশ এবং চাওয়া-পাওয়াগুলো ঠিক রেখে, অনুমতি না পাওয়া সত্ত্বেও যদি গোপনে পড়ালেখা করি তাহলে কী রকম গুনাহগার হতে পারি? যদিও একসময় সে কথা দিয়েছিল, আমি যতটুকু পড়তে চাই, পড়তে পারব।
উত্তর : যেহেতু আপনি স্বামীর কতগুলো বিধানের অধীনে আছেন, সে ক্ষেত্রে স্বামীর আনুগত্য করা ইসলামী শরিয়ত আপনার ওপর বিধান হিসেবে জারি করেছে। সুতরাং আপনার জন্য ওয়াজিব হচ্ছে স্বামীর আনুগত্য করা। স্বামীকে যেভাবে হোক, পড়ালেখার ক্ষেত্রে মানানোর জন্য চেষ্টা করা।
আর স্বামী যদি কোনো কারণে অনুমতি না দেন, উনি যদি মনে করেন অনুমতি দেওয়াটা সঠিক হবে না, সে ক্ষেত্রে গোপনে এ কাজ করা আপনার জন্য বৈধ হবে না।
কারণ, এটি এমন কোনো হক নয় যেটির বৈধতা আপনাকে ইসলাম গোপনেও দিতে পারে। আপনার পড়ালেখার বিষয়টি যেহেতু স্বামীর এখতিয়ারের মধ্যে রয়েছে, স্বামী যদি ভালো মনে করেন, পছন্দ করেন, তাহলে হয়তো তিনি তাঁর অনুমতি দিতে পারেন।
আপনি তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা করুন, পরিবারের অন্য সদস্য যাঁরা আছেন, তাঁদের মাধ্যমে বোঝানোর চেষ্টা করুন। কিন্তু এরপরও যদি অনুমতি না দেয়, তাহলে এ কাজ গোপনে করলে যেটা হবে, আপনার প্রতি আপনার স্বামীর বিশ্বস্ততা, আস্থা দুটিই হারিয়ে যেতে পারে। ফলে দাম্পত্য জীবনে বড় ধরনের কলহ হবে। এ ধরনের কলহের ইতিহাস আমাদের কাছে প্রচুর এসেছে এবং আসছে। এগুলোর জন্য বিভিন্ন লোক আমাদের কাছে কাউন্সেলিংয়ের জন্য আসে এবং প্রশ্ন করে। তাই এটি গোপনে করার বিষয় না। গোপন করে এখানে বড় ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে।
স্বামী হয়তো প্রথমে কথা দিয়েছেন, এখন তাঁকে সে বিষয়টি স্মরণ করিয়ে দিতে হবে। সেই প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে তাঁর বক্তব্য কী, সেটা তাঁর কাছে থেকেই জানতে হবে। যদি বাস্তব কোনো সমস্যা হয়, তাহলে স্বামীকেও সেটা হেকমতের সঙ্গে বোঝাতে হবে এবং স্ত্রীকেও সেটা উপলব্ধি করতে হবে। আর যদি বাস্তব সমস্যা না থাকে, ত্রুটিপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়, সে ক্ষেত্রে স্ত্রী স্বামীকে সুন্দরভাবে বোঝাবে এবং যৌক্তিক অবস্থানে আসাটাই সবার উচিত হবে। এখানে যেহেতু মানিয়ে নেওয়ার বিষয় আছে, পরস্পরের সমঝোতার বিষয় আছে, সে ক্ষেত্রে নিজেদের মধ্যে যেন কোনো ধরনের কলহের সৃষ্টি না হয়, সেদিকে গভীরভাবে নজর দিতে হবে।