আপনার জিজ্ঞাসা
কচ্ছপ খাওয়া কি হালাল?

নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
বিশেষ আপনার জিজ্ঞাসার ৪৮২তম পর্বে কচ্ছপ খাওয়া হারাম কি না, সে সম্পর্কে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে টেলিফোনে জানতে চেয়েছেন আবদুল হান্নান। অনুলিখনে ছিলেন জহুরা সুলতানা।
প্রশ্ন : কচ্ছপ বা কাছিম খাওয়া কি হালাল নাকি হারাম? যদি হারাম হয়, তাহলে কোন কারণে হারাম?
উত্তর : খাওয়া প্রসঙ্গে তো অনেক কথা চলে আসে। অনেকে মনে করে, আমরা যেটা খাই না, সেটাই বোধ হয় হারাম। আসলে হালাল-হারামের বিধান তো আমরা দিতে পারি না।
কাছিম বা কচ্ছপ খাওয়া হালাল। তবে কোনো অঞ্চলে যদি কেউ না খায়, রুচিতে না কোলায় তাহলে তারা খাবে না। তবে আলেমদের মধ্যে এ মাসয়ালা নিয়ে দ্বিমত আছে। কেউ কেউ হারামও বলেছেন। হারাম যাঁরা বলেছেন, কচ্ছপের ব্যাপারে তাঁদের বক্তব্য হচ্ছে, কচ্ছপের মধ্যে হিংস্রতা রয়েছে এবং এটি খবিস বা নোংরা ধরনের। যেহেতু এর মধ্যে নোংরামি আছে, তাই তাঁরা এটাকে পছন্দ করেননি। তাই একজন প্রসিদ্ধ ইমাম কচ্ছপকে খাওয়ার ব্যাপারে বলেছেন যে, ‘এটি জায়েজ নেই।’
আবার আমরা যদি হাদিসের সাধারণ বক্তব্য দেখি, সেখানে সমুদ্রের সব প্রাণীকে রাসূল (সা.) হালাল ঘোষণা করেছেন। অর্থাৎ সবই হালাল। সুতরাং এর মধ্যে কচ্ছপ তো পড়বেই। যেহেতু কচ্ছপ সমুদ্র বা নদীর মধ্যেই পাওয়া যায়। তাই এটা যদি কেউ খান, এতে তিনি গুনাহ করেননি, হারাম কাজ করেননি। এটি খাওয়া জায়েজ। তবে বিষয়টি রুচির সঙ্গে সম্পৃক্ত। যেমন : গুইসাপ জাতীয় একটা প্রাণী, যেটাকে কোনো কোনো এলাকায় শাণ্ডা বলা হয়ে থাকে, রাসূল (সা.)-এর সামনে কেউ খেয়েছেন। কিন্তু রাসূল (সা.) এটি খান নাই, উনার রুচিতে আসেনি। যেহেতু কিছু কিছু বিষয় রুচির সঙ্গে সম্পৃক্ত, সেহেতু যে কচ্ছপ খাচ্ছে না, তাঁকে জোর করে খাওয়ানোর কোনো দরকার নেই। এটি খেয়াল রাখতে হবে। কিন্তু কেউ খেলে সেটাকে হারাম বলতে গেলে দলিল দিতে হবে। যেহেতু এটি সহিহ বর্ণনার মধ্যে হারাম সাব্যস্ত হয়নি।