মহানবী (সা.)-এর মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের পথ পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ
সৌদি সরকার ‘ইন দ্য প্রফেটস স্টেপস’ নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে, যেটির লক্ষ্য মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতে ব্যবহৃত ঐতিহাসিক পথটি পুনরায় তৈরি করা। গত সোমবার (২৭ জানুয়ারি) উহুদ পাহাড়ের নিকটে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মদিনার আমির প্রিন্স সালমান বিন সুলতান প্রকল্পটির কাজ উদ্বোধন করেন।
‘ইন দ্য প্রফেটস স্টেপস’ প্রকল্পে মক্কা থেকে মদিনা পর্যন্ত ৪৭০ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে, এর মধ্যে ৩০৫ কিলোমিটার পথ হাঁটার ব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া ৪১টি ঐতিহাসিক ল্যান্ডমার্ক পুনরুদ্ধার করা হবে। পাশাপাশি মহানবী মোহাম্মদ (সা.)-এর হিজরতের সময়ের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা তুলে ধরতে পাঁচটি ইন্টারেক্টিভ স্টেশন থাকবে। দর্শনার্থীদের ইসলামিক ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়গুলো জানার সুযোগ করে দিতে একটি হিজরত মিউজিয়াম থাকবে।
পুরো পথজুড়ে মোট আটটি স্টেশন মহানবী (সা.) এর হিজরত সম্পর্কে গভীর জ্ঞান ও উপলব্ধি প্রদান করবে। এ ছাড়া ৩০টির বেশি রেস্তোরাঁ এবং ৫০টি দোকান দর্শনার্থীদের অভিজ্ঞতাকে আরও সমৃদ্ধ ও উপভোগ্য করবে৷ প্রতিদিন ১২ হাজার দর্শনার্থী এ পথ পরিদর্শন করতে পারবেন। আধুনিক সব সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত প্রকল্পটি নির্বিঘ্নে ইসলামের ইতিহাস জানতে এবং আধ্যাত্মিকতায় আবিষ্ট হওয়ার সুযোগ করে দেবে মুসলমানদের।
যুবরাজ সালমান বিন সুলতান বলেন, ‘এই প্রকল্পটি ইসলামিক ঐতিহ্য রক্ষায় আমাদের নেতৃত্বের অঙ্গীকারকে প্রমাণ করে। এটি দর্শনার্থীদের জন্য মহানবী (সা.) এর হিজরতের পথ এবং সে সময়কার ল্যান্ডমার্কগুলো অন্বেষণের সুযোগ প্রদান করবে।’
যুবরাজ সালমান আরও বলেন, এই উদ্যোগটি উল্লেখযোগ্য ইসলামিক ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলোকে পুনর্নির্মাণ ও সক্রিয় করতে সৌদি আরবের প্রচেষ্টার অংশ। তিনি দর্শনার্থীদের জন্য একটি ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি সৌদি আরবের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্যগুলো প্রচারের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
সৌদির জেনারেল এন্টারটেইনমেন্ট অথরিটির চেয়ারম্যান তুর্কি আলালশিখ এ প্রকল্পকে দেশটির সভ্যতা ও ঐতিহ্য তুলে ধরার ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘এই উদ্যোগটি বাদশাহ সালমান ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের ইসলামের ইতিহাস সংরক্ষণ ও প্রচারের নির্দেশনাকে প্রতিফলিত করে।’
প্রকল্পটি নির্ভুলভাবে বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবে বিভিন্ন ঐতিহাসিক ও সরকারি প্রতিষ্ঠান। আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকল্পের কাজ নভেম্বরে চালু হবে এবং তা ছয় মাস চলবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে দর্শনার্থীরা এমন একটি যাত্রা উপভোগ করবেন, যেখানে রয়েছে ইসলামের ইতিহাস, আধ্যাত্মিকতা ও সংস্কৃতির মেলবন্ধন।