৪২১ বছরের ঈদগাহ মসজিদ

৪২১ বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক ঈদগাহ মসজিদ উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী স্থাপনার মধ্যে অন্যতম। এই ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাটি উপজেলার ভোগনগর ইউনিয়নের ভাবকি গ্রামে অবস্থিত।
শালবন ঘেরা মনোরম পরিবেশে দাঁড়িয়ে থাকা ১৬০৪ সালে নির্মিত এই মসজিদটি এখনো কালের সাক্ষী হয়ে আছে। মাত্র ১২ ফুট দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের এ মসজিদের উচ্চতা মিনারসহ প্রায় ৩০ ফুট। এক সময় নিয়মিত নামাজ আদায় করা হলেও বর্তমানে শুধুমাত্র দুই ঈদের জামাতের জন্য ব্যবহৃত হয়।
স্থানীয়রা জানান, মসজিদটি যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হলে শুধু ধর্মীয় উপাসনালয় নয়, বরং গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবেও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য টিকে থাকবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদ্যোগই পারে এই শতাব্দী প্রাচীন স্থাপনাটিকে রক্ষা করতে।
মসজিদটি দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা ইউসুফ আলী জানান, তার পূর্বপুরুষরাই এটি নির্মাণ করেন। সে আমলে জনবসতী কম থাকায় ছোট পরিসরে নির্মিত হয় মসজিদটি। মাত্র ৮ থেকে ১০ জন মুসল্লি দুই কাতারে দাঁড়িয়ে নামাজ আদায় করতেন। এখন চারপাশে গড়ে উঠেছে জনবসতি। আর সেই গভীর জঙ্গলের অস্তিত্ব নেই। কিন্তু মসজিদটি ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে এখনো টিকে আছে। দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকার ফলে এটি প্রায় ধ্বংসের মুখে পড়েছিল। ২০১১ সালে স্থানীয়দের উদ্যোগে মসজিদটির সংস্কার করা হয়।
পুরোনো নকশার আদলে আবার নতুন করে ৪টি মিনার ও ১টি গম্বুজ নির্মাণ করা হলেও বর্তমানে ২টি মিনার ও ১টি গম্বুজ টিকে আছে।
স্থানীয় শিক্ষাবিদ মাহাতাব উদ্দীন মাস্টার বলেন, ‘কালের বিবর্তনে মসজিদের ব্যবহারেও পরিবর্তন এসেছে। আমি শুনেছি, অতীতে একসময় এখানে নিয়মিত নামাজ আদায় করা হত, কিন্তু এখন এখানে শুধুমাত্র ঈদের জামাতের জন্য ব্যবহৃত হয়। অতীতের সেই জঙ্গলঘেরা নির্জন পরিবেশ আর নেই, তবে এই ঈদগাহ মসজিদটি এখনো দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাসের এক নীরব সাক্ষী হয়ে।’