কেরানীগঞ্জের দৃষ্টিনন্দন সাউথ টাউন জামে মসজিদ

গ্রামীণ পরিবেশের মাঝে সৌন্দর্যে ঘেরা ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় ছোট বড় মিলিয়ে ১৪৫টি গম্বুজ দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে কেরানীগঞ্জের সাউথ টাউন জামে মসজিদ। দৃষ্টিনন্দন এই রাজকীয় মসজিদের অবস্থান ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার তেঘরিয়া ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুর সাউথ টাউন আবাসিক এলাকায়। এটি এমন একটি মসজিদ যা তাঁর অনন্য নির্মাণশৈলী দিয়ে মানুষের মনে জায়গা করে নিয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাউথ টাউন আবাসিক আবাসন প্রকল্পের মাঝামাঝি নির্মাণ করা এই মসজিদের আশেপাশে তেমন বসতি নেই বললেই চলে, মসজিদের আশেপাশে অল্প সংখ্যক বসবাসকারী ও আবাসন প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা লোকজন এ মসজিদে নামাজ আদায় ও মসজিদের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন। এ ছাড়াও প্রতিনিয়ত এই মসজিদের নান্দনিক সৌন্দর্য দেখতে মানুষ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কেরানীগঞ্জে ছুটে যায়।
মসজিদ প্রবেশের প্রথমেই রয়েছে একটি বড় কেচি গেইট, যা পেরিয়ে ভিতরে ডুকলে হাতের দুই পাশে রয়েছে দুইটি ওযু খানা এবং একটু সামনে এগিয়ে গেলেই মসজিদের মূল ভবনের ভেতরে প্রবেশের জন্য রয়েছে কাঠের তৈরি প্রধান তিনটি ফটক, ফটকের দুই পাশে মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের থাকার জন্য দুইটি রুম রয়েছে।
প্রধান ফটক ছাড়াও রম্বস আকৃতির এই মসজিদের মাঝামাঝি উত্তর ও দক্ষিণ দুই পাশে রয়েছে আরও দুটি কাঠের ফটক। দিনের বেলায় মসজিদের ভেতরে পর্যাপ্ত পরিমাণে আলো-বাতাস প্রবেশের জন্য চারপাশে রয়েছে দু’স্তরের শতাধিক রঙিন কাঁচের জানালা যা মসজিদের বাহিরে ও ভিতরের সৌন্দর্যকে আরো বেশি বৃদ্ধি করে দিয়েছে।
মসজিদে নামাজ আদায় শেষে পুরান ঢাকার লালবাগ থেকে আসা কাপড় ব্যবসায়ী জাহিদ হাসানের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, শুধু আজকে না মাঝেমাঝেই আমি এখানে আসি, অবসর সময় পেলে বন্ধুরা মিলে বাইক নিয়ে এখানে ছুটে আসি। মসজিদটি বাহির থেকে দেখতে যেমন সুন্দর ভেতরেও দেখতে খুব সুন্দর লাগে, ফরজ নামাজ আদায়ের পাশাপাশি নফল নামাজ পড়ার জন্য খুব সুন্দর একটি পরিবেশে।
এ বিষয়ে সাউথ টাউন আবাসনের দায়িত্বে থাকা মো. মাহবুব জানান, প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে আধা বিঘা জমির উপর নির্মিত এ মসজিদটি তৈরি করতে সময় লেগেছে প্রায় দুই বছর ৷
তিনি আরও বলেন, ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি কাজ শেষে সাধারণ মুসল্লি ও দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া এই মসজিদে প্রায় ৬৫০ থেকে ৭০০ জন মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারে, মসজিদে একজন ইমাম একজন মুয়াজ্জিন ও একজন খাদেম রয়েছে বলে জানান তিনি ।
শহরের কোলাহল মুক্ত গ্রামীণ পরিবেশের এই মসজিদটি দূর থেকে দেখলে যে কেউ মনে করবে এটি হয়তো কোনো রাজপ্রাসাদ বা জমিদারের অট্টালিকা। অপরূপ সৌন্দর্যে ঘেরা চোখ ধাঁধানো আধুনিক ছোঁয়ায় তৈরি করা খোলামেলা পরিবেশের কারণে সাউথ টাউন জামে মসজিদের সুনাম ছড়িয়ে যাচ্ছে দেশ ও দেশের বাহিরে, এমনকি স্থানটি এখন দর্শনীয় একটি স্থান হিসেবে পরিচিত লাভ করছে।