অনন্য, অসাধারণ মায়ার্স
অবিশ্বাস্য এক ম্যাচের সাক্ষী হলো ক্রিকেট বিশ্ব! চমৎকার ব্যাটিং নৈপুণ্য দেখালেন ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান কাইল মায়ার্স। অবশ্য তা দেখে বোঝার উপায় ছিল না অভিষেক ম্যাচ খেলেছেন। একটা ভঙ্গুর দল নিয়ে একাই লড়াই করে আরেকবার জানান দিলেন ক্যারিবীয়দের সার্মথ্যের কথা। গড়লেন দারুণ কিছু ইতিহাস। তাঁর রেকর্ড গড়া ম্যাচটিতে তিন উইকেটে হেরে যায় বাংলাদেশ।
কাইল মায়ার্স যখন ব্যাটিং করতে নামেন তখন তিন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানই ছিল না ক্যারিবীয়দের। মাথায় বিশাল রানের বোঝা। সেই চাপ নিয়েই মায়ার্স গড়লেন ইতিহাস। শুরুটা খেললেন খুব সাবধানে, সতীর্থ বোনারকে নিয়ে কোনো রকম ঝুঁকি না নিয়েই শেষ করলেন চতুর্থ দিনের খেলা।
আজ রোববার পঞ্চম দিনে তিন উইকেটে দলীয় ১১০ রান নিয়ে শুরু হয় তাঁর লড়াই। তাইজুল, মিরাজ, মুস্তাফিজদের বাধা টপকে ১৭৮ বলে তুলে নেন অভিষেক সেঞ্চুরি। এরপর এগিয়ে যান ডাবল সেঞ্চুরির পথে। ম্যাচের শেষ দিকে তাও হয়ে যায় শেষ পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ইতিহাস গড়া জয় উপহার দেন। বাংলাদেশের দেওয়া ৩৯৫ রানের বিশাল লক্ষ্য টপকে তিন উইকেটের রোমাঞ্চকর জয় পায় ক্যারিবীয়রা।
চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করার দিক দিয়ে টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের পঞ্চম ম্যাচ এটি। এরআগে মাত্র চার ম্যাচে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের নজির আছে। সেখানেও অবশ্য ক্যারিবীয়দের নামই সবার উপরে। ২০০৩ সালে সর্বোচ্চ ৪১৮ রান তাড়া অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জিতেছে তারা।
রেকর্ড গড়া জয় উপহার দেওয়া মায়ার্স খেলেন ২১০ রানের ইনিংস। ৩১০ বলে তাঁর ইনিংসটি সাজানো ছিল ২০ বাউন্ডারি ও সাত ছক্কায়। টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে অভিষেকে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ রান করা ক্রিকেটার এখন মায়ার্স। একই সঙ্গে টেস্টে চতুর্থ ইনিংসে অভিষেকে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরিয়ান তিনি। আর সবমিলিয়ে ষষ্ঠ ক্রিকেটার হিসেবে চতুর্থ ইনিংসে করেছেন দ্বিশতক।
শুধু নিজের রেকর্ডই নয়, সতীর্থ বোনারের সঙ্গে জুটি বেঁধেও রেকর্ড গড়েছেন মায়ার্স। বোনারের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে ২১৬ রানের জুটি গড়েন তিনি। টেস্ট ইতিহাসের দুই অভিষিক্ত ক্রিকেটারের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি এটি। অভিষেকে দুই ক্রিকেটারের ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সর্বোচ্চ রানের জুটি। একই সঙ্গে চতুর্থ ইনিংসে দুই অভিষিক্ত ক্রিকেটারের সেরা জুটিও এটি। সবমিলিয়ে চট্টগ্রামে ইতিহাস হয়ে থাকলেন কাইল মায়ার্স।