প্রথম ইনিংসে ৩৬৫ রানে থামল বাংলাদেশ

Looks like you've blocked notifications!
বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার ম্যাচ। ছবি-বিসিবি

আগের দিনের দুই সেঞ্চুরিয়ান মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস টেস্টের দ্বিতীয় দিনের শুরুতে জুটি আরও বড় করার আভাস দেন। কিন্তু দ্বিতীয় দিনের প্রথম ঘণ্টাও স্থায়ী হলো না তাঁদের জুটি। লিটনকে আউট করে জমে যাওয়া এই শক্ত জুটি ভাঙেন কাসুন রাজিথা। এরপরও বাকিদের নিয়ে লড়াই করে বাংলাদেশকে সাড়ে তিনশ রানের অধিক সংগ্রহ এনে দেন মুশফিকুর রহিম।

মুশফিকের লড়াইয়ের পর ঢাকা টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৩৬৫ রানে থেমেছে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত মুশফিক নিজে খেলেছেন ১৭৫ রানের ইনিংস। ৩৫৫ বলে তাঁর ইনিংস সাজানো ছিল ২১টি বাউন্ডারি দিয়ে। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ রানটা এসেছে তাঁর ব্যাট থেকেই।

এ ছাড়া আগের দিন থিতু হয়ে যাওয়া লিটন খেলেছেন ১৪১ রানের ইনিংস। ২৪৬ বলে তাঁর ইনিংস সাজানো ছিল ১৬ বাউন্ডারি ও এক ছক্কা দিয়ে।

মাঝে ব্যাট করতে নেমে ভালো করতে পারেননি দীর্ঘদিন পর ফেরা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। তাইজুল কিছুটা সঙ্গ দিয়েছেন মুশফিককে। ৩৭ বলে দুই বাউন্ডারিতে ১৫ রান করেন তিনি। খালেদ আহমেদ রানের খাতা খুলতে পারেননি। থিতু হওয়ার চেষ্টা করে ইবাদতও শেষ পর্যন্ত আউট হয়েছেন শূন্যতে। 

এর আগে টেস্টের প্রথম দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ২৭৭ রান। বাকিটা আজ স্কোরবোর্ডে যোগ করেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা।

গতকাল সোমবার লিটন-মুশফিকের সেঞ্চুরিতে ঢাকা টেস্টের প্রথম দিন স্বস্তি নিয়েই শেষ করে বাংলাদেশ। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। প্রথম ওভার রাজিথার ফুল লেন্থের বল জায়গায় দাঁড়িয়ে খেলতে চান মাহমুদুল হাসান জয়। কিন্তু, তাঁকে ফাঁকি দিয়ে বল গিয়ে আঘাত করে স্টাম্পে। শূন্যতেই শেষ হয়ে যায় তরুণ এ ওপেনারের ইনিংস। ছয় টেস্টের ক্যারিয়ারে এ নিয়ে চতুর্থবার শূন্যতে ফিরলেন জয়।

জয়ের ধাক্কা না সামলাতেই হতাশায় ডোবান আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান তামিম ইকবাল। আসিথা ফার্নান্দোর বলে ফ্লিক করার চেষ্টা করেন তামিম। টাইমিং ঠিক হয়নি। ব্যাটের কোনায় লেগে বল যায় পয়েন্টে। দারুণ ক্যাচ নিয়ে তামিমকে শূন্যতে বিদায় করেন জয়াবিক্রমা।

দুই ওপেনারকে হারানোর চাপ সামলাতে পারেননি মুমিনুল হকও। প্রতিপক্ষকে উইকেট তুলে দিয়ে ৯ রানে বিদায় নেন অধিনায়ক। ১৬ রানে তিন উইকেট হারানোর চাপের মধ্যেই নাজমুল হাসান শান্ত ও সাকিব আল হাসানকেও হারায় বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে ২৪ রান তুলতে ৫ উইকেট হারিয়ে খুব বিপদে পড়ে বাংলাদেশ। সেখান থেকে বিপদ কাটাতে প্রথম সেশনের বাকি সময় সামাল দেন মুশফিকুর রহিম।

প্রথম সেশনে মোট ৫ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে ৬৫ রান তোলে বাংলাদেশ। তবে প্রথম ঘণ্টার ধাক্কা সামলে নিয়েই জুটি গড়েন মুশফিক ও লিটন দাস। দুজন মিলে ষষ্ঠ উইকেটে গড়েন রেকর্ড জুটি, ভাঙেন ১৫ বছর আগের রেকর্ড। ২০০৭ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে পি সারা ওভারে মোহাম্মদ আশরাফুলের সঙ্গে ১৯১ রানের জুটি গড়েছিলেন মুশফিক। এতদিন পর্যন্ত ষষ্ঠ উইকেটে এটাই ছিল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি। এই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই আজ সেই ১৫ বছর আগের রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ডের জন্ম দেন লিটন-মুশফিক।

এরপর দিনের তৃতীয় সেশনে সেঞ্চুরি তুলে নেন দুজন। সেঞ্চুরির পর দিনের বাকি সময় বেশ নির্ভার হয়েই খেলেন মুশফিক-লিটন। কোনো উইকেট হারাতে না দিয়ে অবিচ্ছেদ্য থেকেই প্রথম দিন পার করেন দুই ব্যাটার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস : ১১৬.২ ওভারে ৩৬৫/১০ (জয় ০, তামিম ০, শান্ত ৮, মুমিনুল ৯, মুশফিক ১৭৫*, সাকিব ০, লিটন ১৪১, সৈকত ০, তাইজুল ১৫, খালেদ ০, ইবাদত ০; রাজিথা ২৮.২-৭-৬৪-৫, আসিথা ২৬-৩-৯৩-৪, জয়াবিক্রমা ৩৮-৯-১০৮-০, রমেশ ১৪-০-৫৩-০, করুনারত্নে ৪-১-৮-০, সিলভা ৫-০-২১-০)।