বিতর্কে নয়, শ্রেষ্ঠত্ব বিনয়ে হওয়া উচিত সাকিব

Looks like you've blocked notifications!

বাংলাদেশের ক্রিকেটে সাকিব আল হাসান এক অনন্য নাম। তাঁর হাত ধরে দেশ পেয়েছে অনেক সাফল্য। ব্যক্তিগত অর্জনও অনেক। এ মুহূর্তে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকা তিনি। সব ক্ষেত্র মিলে তাঁর তারকাখ্যাতি সবচেয়ে বেশি—এ কথাও ভুল বলা হবে না।

গত ১৬ বছরে কত-শত অর্জন সাকিবের। বাংলাদেশের ক্রিকেটের রেকর্ড বই ঘাঁটলে তাঁর নাম চলে আসে সবার আগে। এটা নিশ্চিত—আরও যে কদিন খেলবেন, দেশকে অনেক সাফল্য এনে দেবেন। তাঁর সেই সামর্থ্য নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই।

 এত খ্যাতি, এত অর্জন, এত সাফল্যের পর সাকিব কি ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে শ্রদ্ধার আসনে স্থান পেয়েছেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে যে কেউ বলবেন—‘না’। কারণ, তিনি যত সাফল্য ঝুলিতে পুরেছেন, তারচেয়ে বেশি বিতর্কে জড়িয়েছেন। বিতর্ক যেন তাঁর নিত্যসঙ্গী।   

অথচ তিনিই পারতেন বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এমন একটি জায়গা দখল করতে, যেখানে অনেকের পক্ষেই যাওয়া সম্ভব নয়। শচীন টেন্ডুলকার ও ব্রায়ান লারার কথাই ধরা যাক। তাঁরা যত বড় ক্রিকেটার ছিলেন, মানুষ হিসেবে ছিলেন তারচেয়ে ঢের বড়। মাঠে যেমন বিনয়ী ছিলেন, মাঠের বাইরে থাকতেন বিতর্কের ঊর্ধ্বে।

মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব যে বিনয়ে, নম্রতায়, তা সাকিবের মধ্যে কখনোই পাওয়া যায়নি। আর, এসবের ধার ধরেন না বলেই বিতর্ক হয় তাঁর নিত্যসঙ্গী।

২০০৬ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকের পর অসংখ্যবার নানা বিতর্কে জড়িয়েছেন। গ্যালারিতে গিয়ে দর্শকের কলার চেপে ধরা, দর্শককে পেটানো, জুয়াড়ির কাছ থেকে প্রস্তাব পেয়েও বোর্ডকে না জানানো, মাঠে আম্পায়ারের সঙ্গে তর্কে জড়ানো। এমন অনেক কারণে আলোচনায় থাকেন তিনি।

আর, এসব বিতর্কের কারণে কয়েকবার অধিনায়কত্ব হারিয়েছেন, হয়েছেন নিষিদ্ধও। কিন্তু, কখনোই সাকিবের চরিত্রে বদল দেখা যায়নি। বরং ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের কারণে সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন।  

এবার আসা যাক সাকিবের সাম্প্রতিক বিতর্ক নিয়ে। বেটউইনার নামের একটি ক্যাসিনোর ওয়েবসাইটের সঙ্গে চুক্তি করেছিলেন তিনি। ওয়েবসাইটের শুভেচ্ছাদূত হিসেবে চুক্তি করে নিজের ফেসবুক পেজে ঘোষণাও দেন। খবরটি দেখেই সবাই অবাক হয়ে যান। কারণ, বাংলাদেশে বেটিং নিষিদ্ধ, অথচ এ ওয়েবসাইটের সঙ্গে যুক্ত হলেন তিনি। তাও বিসিবিকে না জানিয়ে।

যদিও শেষ পর্যন্ত চুক্তি থেকে সরে আসতে বাধ্য হন সাকিব। বিসিবি কঠোর হয়েছে বলেই হয়তো তিনি সরে আসেন। কিন্তু কথা হচ্ছে—একজন অধিনায়ক, সিনিয়র ক্রিকেটার যদি নিজের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন না হন, পরবর্তী প্রজন্ম কাদের আদর্শ মানবে?

লেখক : সাংবাদিক