মিরাজ-সাকিবে আশা বাঁচিয়ে রাখল বাংলাদেশ

Looks like you've blocked notifications!
বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ। ছবি : বিসিবি

ব্যাটিং ব্যর্থতায় ভারতকে খুব বেশি বড় লক্ষ্য দিতে পারেনি বাংলাদেশ। হার দিচ্ছিলো চোখ রাঙানি। তবে সেখান থেকে লড়াইটা জমিয়ে তুলেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও সাকিব আল হাসান। দুজন মিলে শেষ বিকালে ভেঙেছেন ভারতের টপ অর্ডার। তাতে করে অল্প পুঁজি নিয়েও ঢাকা টেস্টে আশা বাঁচিয়ে রাখল বাংলাদেশ।

আগামীকাল রোববার টেস্টের চতুর্থ দিন রোমাঞ্চ অপেক্ষা করছে শেরেবাংলায়। এই টেস্টে জয়ের জন্য ভারতের চাই আরও ১০০ রান, বাংলাদেশের চাই ৬ উইকেট।

আজ শনিবার টেস্টের তৃতীয় দিনের শেষ সেশনে ২৩১ রানে থামে বাংলাদেশ। ভারতের দেওয়া ৮৭ রানের লিড টপকে বাংলাদেশের লিড দাঁড়ায় ১৪৪ রানে। সুতরাং জয়ের জন্য ভারতের দরকার ১৪৫ রান।

এই ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৪ উইকেটে ৪৫ রান নিয়ে দিন শেষ করেছে ভারত। জয়ের জন্য আর ১০০ রান পিছিয়ে থেকে আগামীকাল টেস্টের চতুর্থ দিন শুরু করবে লোকেশ রাহুলের দল।

ভারতের সামনে ছোট লক্ষ্য। তবুও আজ দিনের তৃতীয় সেশনে দারুণ লড়াই করেছেন বাংলাদেশের বোলাররা। একে একে তুলে নিয়েছেন লোকেশ রাহুল, পুঁজারা, শুভমান গিল ও বিরাট কোহলির উইকেট। এর মধ্যে তিনটিই নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ আর একটি নিয়েছেন সাকিব আল হাসান।  

ছোট লক্ষ্য হওয়ায় ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ এখনো সফরকারীদের হাতে। সেখান থেকে ম্যাচের নাগাল পেতে বাংলাদেশি বোলারদেরকেই দায়িত্ব নিতে হবে। কারণ জয় থেকে আর মাত্র ১০০ রান দূরে ভারত। তাই চতুর্থ দিন বোলারদের দিকেই তাকিয়ে বাংলাদেশ।

৮০ রানে পিছিয়ে থেকে আজ টেস্টের তৃতীয় দিন শুরু করে বাংলাদেশ। ভারতের লিড টপকে বড় সংগ্রহ পাওয়াই আজ মূল লক্ষ্য ছিল স্বাগতিকদের। কিন্তু সেই লক্ষ্যে খুব একটা সফল হতে পারেনি বাংলাদেশ।   

গতকাল শুক্রবার টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষ দিকে ব্যাট করতে নেমে অবিচ্ছিন্ন ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও জাকির হোসেন। কিন্তু আজ দিনের শুরুতেই ভাঙল এই জুটি। ফিরে গেলেন শান্ত। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও অশ্বিনের এলবির ফাঁদে পা দেন এই ওপেনার। ৩১ বলে ৫ রান করে শেষ হয় তাঁর ইনিংস।

দীর্ঘদিন পর সাদা পোশাকে ফেরা মুমিনুল প্রথম ইনিংসে আশা দেখালেও এই ইনিংসে পারেননি হাল ধরতে। দলীয় ২৬ রানে সিরাজের কট-বিহাইন্ডে উইকেট বিলিয়ে দেন মুমিনুল(৫)। টিকলেন না সাকিব আল হাসানও। তাঁকে শিকার বানান উনাদকাট।

এরপর একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। কিন্তু উইকেটে থিতু হয়ে লড়াইয়ের আভাস দেন জাকির। হাফসেঞ্চুরির পর তাঁকেও আর স্থায়ী হতে দেয়নি ভারত। ৫১ রান জাকিরকে বিদায় করেন যাদব। জাকিরের পরের লড়াইটা করেন লিটন দাস।

তাঁর ব্যাটে ফের আশা দেখতে শুরু করে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত দলীয় ২১৯ রানে। তবে তাঁর ইনিংসে ভর করেই প্রায় দেড়শর কাছাকাছি টার্গেট দিতে পারে বাংলাদেশ। সাত বাউন্ডারিতে ৯৮ বলে ৭৩ রানের ইনিংস খেলেন ডানহাতি এই ব্যাটার। লিটন ফিরলে বেশিসময় আর টেকেনি বাংলাদেশের ইনিংস। থেমে যায় ২৩১ রানে। 

এর আগে গতকাল শুক্রবার তৃতীয় সেশনে এসে ৩১৪ রানে থামে ভারত। অতিথিরা লিড পায় ৮৭ রানের। এই লিডের জবাবে দ্বিতীয় ইনিংসে নেমে ৭ রানে দিন শেষ করে বাংলাদেশ।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার ঢাকা টেস্টের প্রথম দিন আগে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ২২৭ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৬ রান করেন মুমিনুল হক। বাকিদের ব্যর্থতায় বেশিদূর এগোতে পারেনি সাকিব আল হাসানের দল। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : ২২৭

ভারত ১ম ইনিংস : ৩১৪

বাংলাদেশ ২য় ইনিংস : ৭০.২ ওভারে ২৩১ (শান্ত ৫, জাকির ৫১, মুমিনুল ৫, সাকিব ১৩, মুশফিক ৯, লিটন ৭৩, মিরাজ ০, সোহান ৩১, তাসকিন ৩১*, তাইজুল ১, খালেদ ৪; উমেশ ৯-১-৩২-১, অশ্বিন ২২-২-৬৬-২, উনাদকাট ৯-৩-১৭-১, সিরাজ ১১-০-৪১-২, আকসার ১৯.২-১-৬৮-৩)।

ভারত ২য় ইনিংস : ২৩ ওভারে ৪৪/৪ (রাহুল ২, শুভমান ৭, পুঁজারা ৬, কোহলি ১, অক্ষর ২৬*, উনাদকাট ৩*; মিরাজ ৮-৩-১২-৩, সাকিব ৬-০-২১-১, তাইজুল ৮-৪-৮-০)।