সেন্ট লুসিয়ায় দিন শেষে অস্বস্তিতে বাংলাদেশ

Looks like you've blocked notifications!
বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যকার ম্যাচ। ছবি-সংগৃহীত

সেন্ট লুসিয়াতে ভালো শুরুর আভাস দিয়েও শেষ পর্যন্ত হতাশা নিয়ে টেস্টের প্রথম দিন শেষ করল বাংলাদেশ। বরাবরের মতোই ব্যাটিং ব্যর্থতায় ভুগল বাংলাদেশ। কেউই তেমন বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। ব্যাটিংয়ের পাশাপাশি বোলিংয়েও মেলেনি স্বস্তি। ফলে অস্বস্তি নিয়েই টেস্টের প্রথম দিন শেষ করল সাকিব আল হাসানের দল।

দুই ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম দিন শেষে বিনা উইকেটে ৬৭ রান তুলেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দিন শেষে উইকেটে ৩২ রানে অপরাজিত জন ক্যাম্ববেল। তাঁর সঙ্গে আছেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট (৩০)।

দারুণ বোলিংয়ের পর দ্রুত রান তুলে টেস্টের প্রথম দিনই দাপট দেখাল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাংলাদেশের ইনিংস থেকে মাত্র ১৬৭ রান দূরে থেকে শনিবার টেস্টের দ্বিতীয় দিন শুরু করবে ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটের দল।

শুক্রবার সেন্টি লুসিয়ায় সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ২৩৪ রানে থেমেছে বাংলাদেশ। দলের পক্ষে আট বাউন্ডারিতে ৭০ বলে সর্বোচ্চ ৫৩ রান করেন লিটন দাস।  

ড‍্যারেন স‍্যামি ন‍্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ।

ব্যাটিংয়ে নেমে ভালো শুরু করেন দুই ওপেনার তামিম ও জয়। প্রথম ১০ ওভারে কোনো উইকেট হারায়নি বাংলাদেশ, বরং স্কোরবোর্ডে তোলে ৩১ রান।

ইনিংসের সপ্তম ওভারে পরপর দুই বলে মাহমুদুল হাসান জয়কে এলবিতে আউট দেন আম্পায়ার। দুটিতেই সফল রিভিউ নিয়ে রক্ষা পান তরুণ এই ওপেনার। কিন্তু দুবার রক্ষা পেয়েও থিতু হতে পারেননি জয়। শেষ পর্যন্ত বোল্ড হয়ে ফেরেন তিনি। দলীয় ৪১ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৩১ বলে ১০ রান করেন জয়।

এরপর দলীয় ৬৮ রানে তামিমকেও হারায় বাংলাদেশ। ২৩তম ওভারে আচমকা আলজারি জোসেফের অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের বল মোকাবিলা করতে গিয়ে সহজ ক‍্যাচ তুলে দেন তামিম। ৯ চারে ৬৭ বলে ৪৬ রান করে শেষ হয় তাঁর ইনিংস। এই দুই উইকেট হারিয়েই প্রথম সেশন শেষ করে বাংলাদেশ। বিপরীতে এই সেশনে স্কোরবোর্ডে ৭৭ রান যোগ করে সাকিব আল হাসানের দল।

বাংলাদেশকে চাপে ফেলে দেয় দ্বিতীয় সেশন। দ্বিতীয় সেশনে ২৫ ওভারে ৮২ রান তুলতে হারিয়েছে ৪ উইকেট। এই সেশনের শুরতেই বিদায় নেন দীর্ঘদিন পর জাতীয় দলে ফেরা এনামুল হক বিজয়। অ‍্যান্ডারসন ফিলিপের নিচু হয়ে ভেতরে ঢোকা বল পা বাড়িয়ে খেলতে পারেননি এনামুল। উল্টো পড়েন এলবির ফাঁদে। রিভিউ নেন এনামুল। কিন্তু বাঁচতে পারেননি। ৫ চারে ৩৩ বলে ২৩ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি।

এরপরই একই স্টাইলে বিদায় নেন শান্ত। যদিও তাঁর আউট হওয়া নিয়ে দ্বিধা ছিল বাংলাদেশের। আম্পায়ারদের সিদ্ধান্ত ঠিকভাবে নিতে পারেননি বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। ৭৩ বলে চারটি চারে ২৬ রান করে হতাশা নিয়ে ফেরেন শান্ত নিজেও।

এরপর উইকেটে এসে হাল ধরতে পারেননি আগের ম্যাচে লড়াই করা সাকিব আল হাসান ও নুরুল হাসান সোহান। দুজনেই আজ ফিরে যান দ্রুত। ৮ রান করে বিদায় নেন সাকিব আর সোহান বিদায় নেন ৭ রান করে।

মাঝে লড়াই করেন লিটন দাস। কিন্তু হাফসেঞ্চুরি করে তিনিও আর টিকলেন না। ৫৩ রানে তাঁর প্রতিরোধ ভাঙেন আলজারি জোসেফ। তবে শেষ দিকে কিছুক্ষণ দারুণ লড়াই করেন শরিফুল ও ইবাদত। এই দুজনে ভর করেই শেষ পর্যন্ত ২৩৪ রানের পুঁজি পায় বাংলাদেশ। শরিফুল করেন ২৬ রান আর ইবাদত করেন ২১ রান।

এরপর প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে কোনো উইকেট না হারিয়েই দিনের বাকি অংশ পার করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দিন শেষে তাই ম্যাচের লাগাম ক্যারিবীয়দের হাতেই। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোই মূল চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৬৪.২ ওভারে ২৩৪ (তামিম ৪৬, জয় ১০, শান্ত ২৬, এনামুল ২৩, লিটন ৫৩, সাকিব ৮, সোহান ৭, মিরাজ ৯, ইবাদত ২১*, শরিফুল ২৬, খালেদ ১; রোচ ১৫-৩-৫৭-০, সিলস ১৪.২-৪-৫৩-৩, জোসেফ ১৫-১-৫০-৩, ফিলিপ ৯-১-৩০-২, রিফার ৩-১-৬-০, মেয়ার্স ৮-০-৩৫-২)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ প্রথম ইনিংস : ১৬ ওভারে ৬৭/০ (ব্র্যাথওয়েট ৩০, ক্যাম্ববেল ৩২, সাকিব ২-০-৯-০, মিরাজ ১-০-৯-০, খালেদ ৩-০-১৭-০, ইবাদত ৪-১-৮-০, শরিফুল ৬-৩-১৯-০)।