হোয়াইওয়াশের লজ্জা এড়াতে পারল বাংলাদেশ

Looks like you've blocked notifications!
বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ের মধ্যকার ম্যাচ। ছবি-সংগৃহীত

আগে ব্যাট করে জিম্বাবুয়েকে বড় লক্ষ্য দিতে পারেনি বাংলাদেশ। জিততে হলে তাই দায়িত্ব নিতে হতো বোলারদেরই। সেই কাজে সফল বাংলাদেশের বোলাররা। সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে জয় উপহার দিয়েছেন বোলাররা। তৃতীয় ওয়ানডেতে ১০৫ রানের জয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশের লজ্জা এড়াতে পারল বাংলাদেশ। 

বোলিংয়ে শুরুটা ভালো এনে দিলেন হাসান মাহমুদ। রান তাড়া করতে নামা জিম্বাবুয়েকে প্রথম ধাক্কা দিলেন এই পেসার। জিম্বাবুয়ের ওপেনার কাইতানোকে ফিরিয়ে দিলেন হাসান। এর পর মেহেদী হাসান মিরাজ তুলে নিলেন আরেক ওপেনার মারুমানির উইকেট। এর কিছুক্ষণ পর ইবাদত তুলে নেন জিম্বাবুয়ের আরো দুই উইকেট তুলে নেন। এরপর জোড়া উইকেট নিয়েছেন তাইজুল। আর শেষ দিকে ৪ উইকেট নিয়ে জিম্বাবুয়েকে ধসিয়ে দেন মুস্তাফিজুর রহমান। 

দ্রুত উইকেট নিয়ে জিম্বাবুয়েকে চাপে ফেলে দেয় বাংলাদেশ। যে চাপ কাটিয়ে আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। শেষ পর্যন্ত ১৫১ রানে অলআউট হলে ম্যাচ হাতছাড়া হয় তাদের।   

আজ বুধবার সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে স্কোরবোর্ডে ২৫৬ রান তুলেছে তামিম ইকবালের দল। ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ ৮১ বলে ৮৫রান করেন আফিফ হোসেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭৬ রান করেছেন এনামুল হক বিজয়। ৭১ বলে তাঁর ইনিংসে ছিল ৬টি বাউন্ডারি ও ৪টি ছক্কা।

হারারের স্পোর্টস ক্লাব মাঠে এই ম্যাচেও টসে হারে বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা বেশ সতর্কই করেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও এনামুল হক বিজয়।

কিন্তু দুজন মিলে পারলেন না জুটি বড় করতে। রান আউট হয়ে তামিম ফিরলে ভাঙে ওপেনিং জুটি। ৩০ বলে ৩ চারে ১৯ রান করে বিদায় নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

তামিম ফেরার পরপর আরো দুটি ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। এক ওভারেই হারায় নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিমের উইকেট। দশম ওভারে পেসার ব্র্যাড ইভান্সের শর্ট বল লাফিয়ে উঠে কাট করতে গিয়ে ধরা পড়েন শান্ত। গোল্ডেন ডাকেই সাজঘরের পথে হাঁটেন তিনি।

একই ওভারে মুশফিকও শর্ট বল আপার কাট করেন। বল হাওয়ায় ভেসে যেতে থাকে বাউন্ডারির দিকে। কিন্তু থার্ডম্যান থেকে অনেকটা দৌড়ে এসে দারুণ ক্যাচ নিয়ে মুশফিককে থামিয়ে দেন এনগারাভা। মুশফিকও রানের খাতা খুলতে পারেননি।

দ্রুত তিন টপ অর্ডারের বিদায়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। সেখান থেকে উদ্ধার করতে কিছুটা লড়াই করেন এনামুল হক বিজয়। তাঁকে সঙ্গ দেন মাহমুদউল্লাহ। এই জুটিতে বাংলাদেশ পায় ৯০ বলে ৭৭ রান।

২৫তম ওভারে এই জুটি ভাঙে জিম্বাবুয়ে। ডানহাতি পেসার লুক জঙ্গুয়ের অফ স্টাম্পের বাইরের বলটি এনামুলের ব্যাটের কানা ছুঁয়ে কিপারের গ্লাভসে চলে যায়। ৭১ বলে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ৭৬ রানে শেষ হয় তাঁর ইনিংস।

এনামুল ফেরার পর শুধু হতাশাই দেখেছে বাংলাদেশ। উইকেটে টিকে থেকে ডট বলের মহড়ায় চাপ বাড়িয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। মাত্র ৩৯ রান করতে তিনি খেলেছেন ৬৯টি ডট বল।

মাহমুদউল্লাহ ফেরার পর শেষ দিকে বাকিদের নিয়ে কোনো মতে বাংলাদেশকে ২৫৬ রানের পুঁজি এনে দেন আফিফ হোসেন। ৮১ বলে ৬ বাউন্ডারি আর ২ ছক্কায় ৮৫ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। মাঝে ব্যাটিংয়ে নেমে সুবিধা করতে পারেননি মেহেদী হাসান মিরাজও। এই অফ স্পিনারের ব্যাট থেকে এসেছে ২৪ বলে ১৪ রান।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৫৬/৯ (তামিম ১৯, এনামুল ৭৬, শান্ত ০, মুশফিক ০, মাহমুদউল্লাহ ৩৯, আফিফ ৮৫*, মিরাজ ১৪, তাইজুল ৫, হাসান ০, মুস্তাফিজ ০, ইবাদত ০*, এনগারাভা ১০-১-৫১-১, নিয়াউচি ৬-০-২৪-০, ইভান্স ৮-১-৫৩-২, রাজা ১০-০-৪২-১, কাইয়া ৪-০-১৬-০, মাধেভেরে ৬-০-২৭-০)। 

জিম্বাবুয়ে: ৩২.২ ওভারে ১৫১ (কাইটানো ০, মারুমানি ১, কাইয়া ১০, মাধেভেরে ১, রাজা ০, মাডান্ডে ২৪, মুনিয়োঙ্গা ১৩, জঙ্গুয়ে ১৩, ইভান্স ২, এনগারাভা ৩৪*, নিয়াউচি ২৬; হাসান মাহমুদ ৮-০-৩৮-১, মিরাজ ২-০-১৬-১, ইবাদত ৮-১-৩৮-২, তাইজুল ৯-০-৩৪-২, মুস্তাফিজ ৫.২-০-১৭-৪)।

ফল: বাংলাদেশ ১০৫ রানে জয়ী। 

সিরিজ: তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জয়ী জিম্বাবুয়ে।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: আফিফ হোসেন।

ম্যান অব দ্য সিরিজ: সিকান্দার রাজা।