এবার ঘুচবে টেস্টের হতাশা?

বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ‘বিতর্কিত’ আম্পায়ারিংয়ের শিকার হয়ে ভারতের কাছে হারের দুঃখ এখনো হয়তো তাড়িয়ে বেড়ায় বাংলাদেশের বহু মানুষকে। সেই ম্যাচের পর জল কম ঘোলা হয়নি। বাংলাদেশ-ভারত ক্রিকেট-সম্পর্কের অবনতিও হতে পারত হয়তো। সেটা যে হয়নি তা আমাদের পরম সৌভাগ্য। তিন মাস আগের ‘তিক্ততা’ পেছনে ফেলে আবার মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ ও ভারত। তবে এবার ওয়ানডে নয়, টেস্টে। বুধবার থেকে ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে শুরু হতে যাওয়া একমাত্র টেস্টে মুখোমুখি হবে দুই প্রতিবেশী।
urgentPhoto
গত মার্চে ভারতের কাছে ১০৯ রানে হেরে বাংলাদেশ বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নেওয়ার পর গণমাধ্যমের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমগুলোতেও ঝড় উঠেছিল। দেশে ফিরে আইসিসি চেয়ারম্যান এন শ্রীনিবাসনের কড়া সমালোচনা করে আইসিসি সভাপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ান আ হ ম মুস্তফা কামাল।
বিশ্বকাপের সেসব বিতর্ক যে ভারতের এবারের বাংলাদেশ সফরকে তাতিয়ে রাখবে, তার ইঙ্গিত পাওয়া গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের কথায়, ‘ঘরের মাটিতে ভারতকে হারানোর এটাই সেরা সুযোগ। আর তা করতে পারলে বিশ্বকাপে যা হয়েছে, তার প্রতিশোধ নেওয়া যাবে।’ পেশাদারত্বের কারণে দুই দলের ক্রিকেটাররা হয়তো সেই ম্যাচের প্রসঙ্গ টানতে আগ্রহী নন। তবে প্রতিবেশী দুই দেশের ক্রিকেট-পাগল মানুষ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল বিতর্ক সম্ভবত সহজে ভুলে যাবে না।
সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স উল্লেখ করার মতো। বিশ্বকাপ শেষে দেশে ফিরে পাকিস্তানকে ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশ করার পর একমাত্র টি-টোয়েন্টিতেও সহজেই হারিয়েছিল মাশরাফির দল। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে অবশ্য মুশফিক-সাকিবদের পরাজয়ের হতাশায় পুড়তে হয়েছিল। খুলনায় প্রথম টেস্ট তামিম-ইমরুলের দৃঢ়তায় ড্র করলেও মিরপুরে দ্বিতীয় টেস্ট হেরে গিয়েছিল।
ভারতের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে তাই বাংলাদেশের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশ দল অবশ্য জয়ের স্বপ্নে বিভোর। অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের মতো মুমিনুল হকও জয়ের লক্ষ্যের কথাই জানিয়েছেন, ‘অবশ্যই আমরা জয়ের জন্য খেলব। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ড্র করতে পারলেও খুশি হবো।’
২০০০ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টের প্রতিপক্ষ ছিল ভারতই। ভারতের বিপক্ষে সাতটি টেস্ট খেলে ছয়টিতেই হার মেনেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে তিনটি হারই ইনিংস ব্যবধানে। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে দুই দলের সর্বশেষ টেস্টে বাংলাদেশ হেরেছিল ১০ উইকেটে।
তবে এখন বাংলাদেশের ক্রিকেট অনেক বদলে গেছে। সাকিব-মুশফিক-তামিমরা আগের চেয়ে অনেক পরিণত। টেস্টে বাংলাদেশের নির্ভরতার প্রতীকে পরিণত হয়েছেন মুমিনুল হক। তবে চোটের কারণে মাহমুদউল্লাহর খেলতে না পারা স্বাগতিকদের জন্য বড় ধাক্কা। আঙুলের চোটের কারণে মুশফিকুর রহিম হয়তো উইকেটরক্ষকের ভূমিকা পালন করতে পারবেন না। সে ক্ষেত্রে টেস্ট অভিষেক হতে পারে লিটন দাসের।