ভারতের দর্পচূর্ণ
মুস্তাফিজুর রহমানের দুর্দান্ত বোলিং আর সাকিব-মুশফিক-সৌম্য-লিটনের দারুণ ব্যাটিংয়ে ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতকে ছয় উইকেটে হেসেখেলে হারিয়েছে বাংলাদেশ। এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয়ের পর স্বাগতিকদের সামনে এখন আরো একটি হোয়াইটওয়াশের আনন্দে মেতে ওঠার স্বর্ণালি সুযোগ। সেটা সত্যিই হবে কি না, তা জানার জন্য তাকিয়ে থাকতে হবে তৃতীয় ওয়ানডের দিকে। তবে ভারতের বিপক্ষে টানা দুটি ওয়ানডে জিতে ২০১৭ সালের জুনে ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ আট দলের লড়াই চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়ে গেছে বাংলাদেশের।
অভিষেক ম্যাচে পাঁচ উইকেট নেওয়ার পর রোববার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ছয় উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন বাঁ-হাতি পেসার মুস্তাফিজ।
ক্রিকেট অঙ্গনে ভারতের আধিপত্যের কথা কারোরই অজানা নেই। মাঠে, মাঠের বাইরে সব জায়গাতেই দাপুটে উপস্থিতি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআইয়ের। কোহলি-ধোনিদের উদ্ধত ভঙ্গিতে প্রায়ই সেটার বহির্প্রকাশ হয়। প্রথম ওয়ানডে জয়ের নায়ক মুস্তাফিজকে ধোনির ধাক্কা মারা নিয়ে কম কথা হয়নি। অক্রিকেটারসুলভ আচরণের জন্য ধোনিকে জরিমানা করার পর ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের চাপেই নাকি জরিমানা করা হয়েছে মুস্তাফিজকে। তবে বাংলাদেশে এসে এই সিরিজ হারের পর ক্রিকেট-দম্ভ হয়তো কিছুটা কমবে ভারতের।
মিরপুরে ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ভারতকে দেখিয়েছিল ব্যাটিং সামর্থ্য। ভারতের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো ৩০০ রান পেরিয়ে ম্যাচ জিতেছিল ৭৯ রানের ব্যবধানে। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশ ভারতকে নিয়ে ছেলেখেলা করল বোলিং-শক্তিতে। ১৯ বছর বয়সী পেসার মুস্তাফিজের দুর্দান্ত বোলিংয়ের সামনে ভারতের বিশ্বখ্যাত ব্যাটিং লাইনআপ গুটিয়ে গেল মাত্র ২০০ রানে। বৃষ্টির জন্য খেলা প্রায় দুই ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমিয়ে আনা হয় তিন ওভার। ৪৭ ওভারের ম্যাচে ভারত অলআউট হয় ৪৫ ওভারের মধ্যে। আর বাংলাদেশ মাত্র চার উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ৩৮ ওভার ব্যাট করে।
ওয়ানডেতে ৩০তম অর্ধশতক করে দলকে জিতেয়েই মাঠ ছেড়েছেন সাকিব আল হাসান। বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার অপরাজিত ছিলেন ৫১ রানে। সাব্বিরের অবদান অপরাজিত ২২ রান। ৩৬ ও ৩৪ রান এসেছে লিটন দাস ও সৌম্য সরকারের ব্যাট থেকে। ৩১ রান করেছেন মুশফিকুর রহিম।
বল হাতে ভারতকে প্রায় একাই ভুগিয়েছেন মুস্তাফিজ। পাঁচ উইকেট নিয়ে অভিষেক ওয়ানডে স্মরণীয় করে রাখার পর ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচে ছয় উইকেট নিয়ে গড়েছেন ইতিহাস। তাঁর চেয়ে ভালো শুরু ওয়ানডে ইতিহাসে আর কারো নেই। জিম্বাবুয়ের ব্রায়ান ভিটোরি ক্যারিয়ারের প্রথম দুই ম্যাচে নিতে পেরেছিলেন ১০ উইকেট। আর মুস্তাফিজ নিলেন ১১ উইকেট। রোববার তাঁর শিকার হয়েছেন রোহিত শর্মা, মহেন্দ্র সিং ধোনি, সুরেশ রায়না, অক্ষর প্যাটেল, রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজা। দুটি করে উইকেট নিয়েছেন নাসির হোসেন ও রুবেল হোসেন। ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫৩ রান করেছেন শিখর ধাওয়ান। ৪৭ রান এসেছে অধিনায়ক ধোনির ব্যাট থেকে।